Ram Lalla Idol: মূর্তি বানাতে গিয়ে চোখে ঢুকেছে পাথর, থামেনি রামলালার মূর্তির কাজ ; সাফল্যের আনন্দে লুকিয়ে থাকা গল্প অরুণ যোগীরাজের পরিবারের

ভাস্কর অরুণ বলেন- আমাকে যখন মূর্তিটি বানাতে বলা হয় তখন আমার মনে হয়েছিল মূর্তিটি একটি শিশুর হওয়া উচিত, যেটি শিশুর মত হলেও হবে ঐশ্বরিক, কারণ এটি ঈশ্বরের অবতারের মূর্তি। যারা মূর্তির দিকে তাকাবে তারা যেন ওই মূর্তির মধ্যে দেবত্ব অনুভব করে।

Ram Lala Idol For Ram Mandir Photo Credit: Twitter@ANI

মূর্তি তৈরিতে শুধু শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গীই লাগে না, অঙ্কও লাগে। ছেনি হাতুড়ি বাটালি শুধু নয় লাগে ক্ষুরধার মস্তিষ্ক। অঙ্কের হিসেবে মূর্তির ভরকেন্দ্র এমনই হবে যে দেহের প্রতিটি বিভঙ্গ সুষম ছন্দে দর্শককে আনন্দ দিতে পারে নিশ্চিত হয়ে তবেই গড়া যায় মূর্তি। রাম মন্দিরে যে রামলালার যে মূর্তি স্থাপন করা হবে তা হবে বিশ্বের সবচেয়ে অনন্য মূর্তি। রামলালার এই মূর্তিটি হবে শিশুরূপের তা ইতিমধ্যেই আমরা জেনে গেছি। আর যার হাতের ছেনিতে তৈরি হয়েছে এই মূর্তি তাঁর নাম ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ। তবে  অযোধ্যার রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থাপন হতে চলা "রাম লালা"র মূর্তি গড়তে গিয়ে চোখে আঘাত নিয়েও একনাগাড়ে কাজ করে গেছেন শিল্পী এমনকি মূর্তি গড়তে দিনের পর দিন বিনিদ্র রাতও কাটিয়েছেন তিনি। এমনই তথ্য জানালেন তাঁর পরিবার।

অযোধ্যা রাম মন্দির ট্রাস্ট ঘোষণা করার পর মাইসুরুর ভাস্কর পরিবার আনন্দিত হয়েছে।  যে তাদের ছেলের হাতে তৈরি 'রাম লালা' মূর্তিটি উত্তর প্রদেশের অযোধ্যা শহরে ভগবান রামের জন্মস্থানে মন্দিরে স্থাপনের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। যোগীরাজের স্ত্রী বিজেতা বলেন- স্বামীর এই কাজে তিনি অত্যন্ত খুশি। তবে মূর্তিটি তৈরি করতে গিয়ে কীভাবে তার চোখে আঘাত পেয়েছিলেন সে সম্পর্কে একটি গল্পও শেয়ার করেছেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "যখন কাজটি যোগীরাজকে দেওয়া হয়েছিল, তখন আমরা তথ্য পেয়েছিলাম যে এই মূর্তির আদর্শ পাথরটি মাইসুরুর কাছে পাওয়া যাবে। তবে সেই পাথরটা ছিল খুবই শক্ত। এতটাই শক্ত যে  ছেনি দিয়ে কাটার সময় এর সূক্ষ্ম একটি অংশ অরুণের চোখে লেগে যায়। এরপর একটি ছোটো অপারেশনের মাধ্যমে সেই পাথরটিকে বের করা করা হয়।  চোখে ব্যথার সময়ও তিনি কাজ না থামিয়ে কাজ চালিয়ে গেছেন। তার কাজ এত ভালো ছিল যে তা সবাইকে মুগ্ধ করেছে। এর জন্য আমরা সবাইকে ধন্যবাদ জানা।

স্ত্রী বিজেতা আরও বলেন যে প্রতিমা খোদাই করার সময় কোনও ত্রুটি হওয়ার সুযোগ নেই।সেই সময় যোগীরাজ অনেক রাত বিনিদ্র অবস্থায় কাটিয়েছেন এবং সবকিছু ভুলে রাম লালা মূর্তি তৈরিতে মনোনিবেশ করেছিলেন। এমন দিন ছিল যখন আমরা খুব কমই কথা বলতাম, এবং পরিবারকেও তিনি খুব কমই সময় দিতেন। তবে  অরুণের স্বীকৃতিতে সেসব আজ সে সব অতীত।

যোগীরাজের ভাই সূর্যপ্রকাশ জানান, পরিবারের জন্য এটি একটি স্মরণীয় দিন।"যোগীরাজ ইতিহাস তৈরি করেছেন এবং এটা তাঁর প্রাপ্য। তার কঠোর পরিশ্রম এবং কাজের প্রতি নিজেকে উত্সর্গ করে দেওয়ার ক্ষমতা তাকে এত উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

যোগীরাজের মা সরস্বতী বলেন, এটা খুবই আনন্দের বিষয় যে তার ছেলের মূর্তিটি নির্বাচিত হয়েছে।মূর্তি সম্পর্কে বলতে গিয়ে, সরস্বতী বলেন যে-  ভগবান রামকে কেউ দেখেনি তবে ঈশ্বর নিজেই তাঁর পুত্রকে একটি গোটা পাথর থেকে একটি মূর্তি তৈরি করার জন্য অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছিলেন।সম্ভবত ঈশ্বর তাকে তার মূর্তি খোদাই করার জন্য আশীর্বাদ করেছিলেন,"

ভাস্কর অরুণ বলেন- আমাকে যখন মূর্তিটি বানাতে বলা হয় তখন আমার মনে হয়েছিল মূর্তিটি একটি শিশুর হওয়া উচিত, যেটি শিশুর মত হলেও হবে ঐশ্বরিক, কারণ এটি ঈশ্বরের অবতারের মূর্তি। যারা মূর্তির দিকে তাকাবে তারা যেন ওই মূর্তির মধ্যে দেবত্ব অনুভব করে। তাই শিশুসদৃশ মুখের পাশাপাশি দেবত্বের দিকটি মাথায় রেখে প্রায় ছয়-সাত মাস আগে আমি আমার কাজ শুরু করি। এখন আমি অত্যন্ত খুশি। নির্বাচনেরও চেয়ে বেশি, মানুষের প্রশংসায় আমি খুশিব-বলেন বিখ্যাত ভাস্কর।