বিচারপতিকে “মাই লর্ড” “ ইওর অনার” সম্বোধনে নিষোধাজ্ঞা জারি করল রাজস্থান, ব্যাপারটা কী?

এবার থেকে এজলাসে দাঁড়িয়ে কোনও আইনজীবীই বিচারককে “মাই লর্ড” বা “ইওর অনার” বলবেন না, বদলে স্যার বলা যেতে পারে। এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করল রাজস্থানের আদালত।

প্রতীকী ছবি(Photo Credit -pixabay)

জয়পুর, ১৬ জুলাই: “মাই লর্ড” (''My Lord'') বা “ ইওর অনার” (''Your Lordship'') এই শব্দবন্ধ আমাদের খুব পরিচিত। দেশের যে কোনও আদালতের শুনানি কক্ষে এই শব্দবন্ধ প্রয়োগ করতে দেখা যায় বাদি ও বিবাদি পক্ষের আইনজীবীদের। মূলত বিচারক বা বিচারপতিকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই এই শব্দবন্ধের প্রয়োগ হয়ে থাকে। তবে এবার থেকে এজলাসে দাঁড়িয়ে কোনও আইনজীবীই বিচারককে “মাই লর্ড” বা “ইওর অনার” বলবেন না, বদলে স্যার বলা যেতে পারে। এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করল রাজস্থানের আদালত (Rajasthan High Court)। সোমবার এই মর্মে নোটিস জারি করেন রাজস্থান হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সতীশ কুমার শর্মা। আরও পড়ুন-Partial Lunar Eclipse 2019: আজ মধ্যরাতেই পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়তে চলেছে চাঁদ, কেন জানেন?

মোটের উপর বিচারপতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ প্রথা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল রাজস্থান হাইকোর্ট। এবার থেকে বিচারপতিদের ‘মাই লর্ড’ বা ‘ইয়োর অনার’ নয়, একেবারে সোজাসুজি স্যার বলতে হবে। এই ব্রিটিশ সম্বোধন নিষিদ্ধ হলে বিচারপতিদের যাতে অসম্মান না করা হয়, সে দিকেও খেয়াল রেখেছে আদালত। ২০১৪-র এক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বিচারপতি এইচ এল দাত্তু ও বিচারপতি এস এ বোবদের বেঞ্চ জানিয়েছিল, বিচারপতিদের সম্মান জানানোটা জরুরি হলেও সে জন্য তাঁদের ‘মাই লর্ড’ বা ‘ইয়োর অনার’ বলে সম্বোধন করাটা বাধ্যতামূলক নয়। কারণ এই সম্বোধন দাসপ্রথাকে মনে করায়। দুশো বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটেছে তাও ৭৩ বছর পেরিয়ে গেল। কিন্তু কলোনিয়াল মানসিকতাকে এখনও পুরোপুরি ছাড়তে পারেনি একুশ শতকের ভারত। বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে রাজস্থান অন্তত সেকাজে অগ্রণী ভূমিকা নিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আর হাইকোর্টের এহেন সিদ্ধান্তে খুশি রাজস্থানের বার অ্যাসোসিয়েশন। এহেন নিষেধাজ্ঞায় আইনজীবীদের তরফে ১০০ শতাংশ সমর্থন পাওয়া গিয়েছে।

উল্লেখ্য, রাজস্থান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রবীন্দ্র ভট্টের নেতৃত্বে রবিবার একটি বৈঠকে হয়। সেখানেই সর্বসম্মতিক্রমে ঠিক হয়, আদালতের সমস্ত আইনজীবী ও শুনানিতে উপস্থিত সমস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ কার্যকরী হবে। ভারতীয় সংবিধানে উল্লেখিত সাম্যের নীতিকে মর্যাদা দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।