Rabindranath Tagore Death Anniversary: ‘মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের মূল্য দিতে হয়, সে প্রাণ অমৃতলোকে মৃত্যুকে করে জয়’ কবিকে শ্রদ্ধার্ঘ্য

‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।’ কবির মতো প্রতিটি মানুষই বোধয় বাঁচতে চাই, কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে মৃত্যুর কাছে মাথা নত আমাদের করতেই হয়।

Rabindranath Tagore (Photo Credit Wikimedia Commons)

কলকাতা: ‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।’ কবির মতো প্রতিটি মানুষই বোধয় বাঁচতে চাই, কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে মৃত্যুর কাছে মাথা নত আমাদের করতেই হয়। কবিতার মাধ্যমেই তিনি বিশ্ব দরবারে নিজের পরিচিত লাভ করেন, হয়ে ওঠেন বিশ্বকবি। রবীন্দ্রনাথ (Rabindranath Tagore) বাংলা প্রবন্ধের এক অনন্য স্রষ্টা। তিনি লিখতে শুরু করেছিলেন মাত্র ৮ বছর বয়সে। অভিলাষ তাঁর প্রথম প্রকাশিত পত্রিকা। ১২৮৪ বঙ্গাব্দে ১৬ বছর বয়সে "ভিখারিনী" গল্প রচনার মাধ্যমে ছোটগল্প লেখক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ছোটগল্পকর এবং বাংলা ছোটগল্পের শ্রেষ্ঠ শিল্পী। ১৫ পনেরো বছর বয়সে তাঁর প্রথম কাব্য "বনফুল" প্রকাশিত হয়। "গীতাঞ্জলী" এবং অন্যান্য কাব্যের কবিতার সমন্বয়ে স্ব – অনূদিত “ Song Offerings” গ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে প্রথম এশিয় হিসেবে তিনি নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হন।

রবীন্দ্রনাথ তাঁর ৮০ বছরের জীবনে ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৯৫টি ছোট গল্প, ১৯১৫টি গান, ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্য সংকলন করেছেন। ২০০০টিরও বেশি ছবি একেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তিনটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেছেন। যার মধ্যে দুটি আমরা সবাই জানি। ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশ। কিন্তু তৃতীয়টি আমরা অনেকেই জানি না, শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতও তিনিই রচনা করেছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ। মা সারদাসুন্দরী দেবী এবং বাবা কলকাতার বিখ্যাত জমিদার ও ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। কবি শৈশবে কলকাতার ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নরম্যাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমি ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুলে পড়ালেখা করেন। ছেলেবেলায় জোড়াসাঁকোর বাড়িতে অথবা বোলপুর ও পানিহাটির বাগানবাড়িতে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। এরপর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি দেন। পড়াশুনা শেষ করে ১৮৮০ সালে দেশে ফেরেন। এরপর বাবার আদেশে রবীন্দ্রনাথ নদিয়া, পাবনা, রাজশাহী ও উড়িষ্যার জমিদারি তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ। কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। আরও পড়ুন :  Rabindranath Tagore Death Anniversary: কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য

১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ সপরিবারে শিলাইদহ ছেড়ে চলে আসেন বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের উপকণ্ঠে শান্তিনিকেতনে। রবীন্দ্রনাথ পুঁথিগত বিদ্যা একেবারেই পছন্দ করতেন না। শান্তিনিকেতনে আশ্রম তৈরি করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন প্রকৃতির মাঠে পাঠই আসল শিক্ষা দেয়। নতুন ধারার শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। তিনি শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নীচে পড়া পাঠ দানের ব্যবস্থা করেন। রবিন্দ্রানাথ বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি একাধারে কবি, উপন্যাসিক, সঙ্গীতকার, চিত্রশিল্পী, নাট্যকার, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। তিনি বাঙালির গর্ব। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

রবীন্দ্র কাব্যে মৃত্যু এসেছে বারবার, কারণ রবীন্দ্রনাথ ব্যক্তিজীবনে মৃত্যুকে বড় গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন। মাত্র ১৪ বছর নিজের মাকে হারান, তারপর একে একে হারিয়েছেন বহু আপনজনকে। স্ত্রী, নিজের প্রিয় মানুষ, এমনকি সন্তানদের মৃত্যুও তাঁকে দেখতে হয়েছে। তাই জীবদ্দশায় মৃত্যুকে তিনি জয় করেছেন বারবার। ‘মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান’-কাব্য কবিতায় তিনি এভাবে মৃত্যু বন্দনা করেছেন। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২-এ শ্রাবণ (১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট) জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে প্রয়াণ ঘটে। তাঁর দেহান্তর হলেও তিনি আজও তাঁর সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে আমাদের মধ্যে রবি হয়ে আছেন।

(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)

Share Now

Share Now