কাকভোরেই গুলির আওয়াজ, ঋণের ভার সইতে না পেরে দুই পোষ্যকে মেরে আত্মঘাতী যুবক
নার দায়ে প্রায় মাথার চুল বিক্রি হওয়ার জোগাড়, মান বাঁচাতে আত্মহননের পথ বেছেনিলেন এক ব্যক্তি। প্রিয় পোষ্য দুই কুকুরকে খুন করার পর পিস্তলের গুলি চালিয়ে দিলেন নিজের বুকেই, সঙ্গে সঙ্গে রক্ত গঙ্গা বইল।
জয়নগর, ১৮ জুলাই: দেনার দায়ে প্রায় মাথার চুল বিক্রি হওয়ার জোগাড়, মান বাঁচাতে আত্মহননের পথ বেছেনিলেন এক ব্যক্তি। প্রিয় পোষ্য দুই কুকুরকে খুন করার পর পিস্তলের গুলি চালিয়ে দিলেন নিজের বুকেই, সঙ্গে সঙ্গে রক্ত গঙ্গা বইল। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই গুলির শব্দে ততক্ষণে পড়শিরা জেগে গিয়েছেন। কী অঘটন ঘটল ভেবে সভয়ে সবাই শুভঙ্কর রায় চৌধুরির (Shubhankar Roy Choudhury) বাড়ির দিকেই ছুটেছেন। শব্দের আগমন স্থল সম্পর্কে কোনও ভুল ছিল না।বাড়ির মধ্যেই পড়ে আছে দেহ, রক্তে ভাসছে চারদিক। শুভঙ্কবাবুর দেহের কাছে রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছে তাঁর প্রিয় দুই পোষ্য। আরও পড়ুন- Kolkata Metro: সাবধান, মেট্রোর দরজা বন্ধে বাধা দিলে এবার হতে পারে জেল-জরিমানা
গোটা ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন মৃতের স্ত্রী। দোতলায় নিজের ঘরেই ঘুমোচ্ছিলেন, গুলির শব্দে নিচে নেমে এসে দেখলেন এই অঘটন ঘটেছে। একটু দূরেই পড়ে আছে ঘাতক পিস্তলটি। এহেন ঘটনায় পাড়াতে শোরগোল পড়ে যায়। খবর যায় জয়নগর থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। বন্দুকটির লাইসেন্সও পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে জানা গিয়েছে, বন্দুকটি বৈধ, শুভঙ্করবাবুর বাবার নামেই রয়েছে লাইসেন্স।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, বিস্তর দেনায় জর্জরিত ছিলেন মৃত শুভঙ্কর রায় চৌধুরি(৩৮)। বাড়িতে রোজগেরে বলতে তিনি একজনই। তাঁর মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়লেন বিধবা স্ত্রী, বছর তিনেকের শিশুকন্যা, বৃদ্ধা মা ও অবিবাহিত বোন। গত কয়েক মাসে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছেল, কী করে শোধ করবেন বুঝতে পারছিলেন না। এদিকে তিনি যে অটোটি চালান সেটিও অর্থলগ্নি সংস্থার থেকে নেওয়া। মাসিক কিস্তিতে টাকা দিতেন। এদিকে কপর্দক শূন্য হয়ে পড়ায় সেই কিস্তির টাকাও দিতে পারেননি। ফল স্বরূপ গতকালই অটোটি তাঁর থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপরেই তিনি আরও গভীর অবসাদে ডুবে যান, তারপর এই আত্মহত্যার ঘটনা। তাঁর মৃত্যুতে তো কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে এল না। উল্টে গোটা পরিবারটা পথে বসল। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।