ধোনির সমালোচনা করায় খোদ সচিন তেন্ডুলকরকে নজিরবিহীন কায়দায় আক্রমণ, দেখুন কীভাবে ট্রোল চলছে

তিনি ক্রিকেটের ভগবান। বাইশ গজের ব্যাটিংটা তাঁর থেকে কেই বা ভাল বলতে পারে। অবসরের পর তিনি দেশের ক্রিকেটারদের পরামর্শ দেবেন। ভুল হলে সমালোচনা করবেন , সেটাই স্বাভাবিক।

ধোনির সমালোচনা করায় সচিনকে নিয়ে ট্রোল চলছে। (Photo Credits: Twitter)

মুম্বই, ২৫ জুন: তিনি ক্রিকেটের ভগবান। বাইশ গজের ব্যাটিংটা তাঁর থেকে কেই বা ভাল বলতে পারে। অবসরের পর তিনি দেশের ক্রিকেটারদের পরামর্শ দেবেন। ভুল হলে সমালোচনা করবেন , সেটাই স্বাভাবিক। তবু সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar) আর পাঁচজন প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মত পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনা করেন না। দেশের ক্রিকেটারদের পাশে তিনি অভিভাবকের মত দাঁড়ান। ভারত জঘন্যভাবে হারলেও কখনও নিষ্ঠুর সমালোচনা করে বিরাট কোহলিদের আক্রমণ করেন না। সেইরকম সচিনকেও তাঁর দেশের ক্রিকেটারকে একটু কড়া ভাষায় পরামর্শ দেওয়ায় ট্রোল করা হচ্ছে।

আফগানিস্তান ম্যাচে এমএস ধোনির ব্যাটিং মোটেও ভাল হয়নি। গত শনিবার সাউদাম্পটনে আফগানদের বিরুদ্ধে মাহি সেই ম্যাচে অহেতুক রক্ষণাত্মক ব্য়াটিং করে দলের বিপদ ডেকে আনেন। ম্যাচের ২৭তম ওভারে ব্যাটিং করতে নেমে ৭৫ মিনিট ক্রিজে কাটান। কিন্তু রশিদ-নবিদের বিরুদ্ধে ৫২ বলে খেলে ধোনি করেন মাত্র ২৮ রান, স্ট্রাইক রেট মাত্র ৫৩.৮৫। ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে করে ২২৪ রান। আরও পড়ুন-আফগানিস্তানকে হারিয়ে সেমির রাস্তা খোলা রাখলেন সাকিবরা

শেষ অবধি সেই ম্যাচে বুমরা, শামি-রা কোনওরকমে দলকে জিতিয়ে আনলেও, ধোনির ধীর ব্যাটিং কিন্তু হারের আসল কারণ হতে পারত। নক আউটে এমন একটা ইনিংস কিন্তু যাবতীয় স্বপ্নে জল ঢেলে দিতে পারে। তাই সচিন আফগান ম্যাচ নিয়ে ভারতীয় দলকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ধোনির মত সিনিয়র ক্রিকেটারকে আরও বেশি চার্জ নিয়ে খেলতে হত।

ধীরগতির ব্য়াটিংয়ের জন্য ধোনি-কেদার যাদবের সমালোচনা করে সচিন বলেছিলেন, স্ট্রাইক রেটের দিকে লক্ষ্য না দেওয়াটা ওদের ভুল হয়েছে। কেদারের থেকেও ধোনিরই বেশি সমালোচনা করেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। সচিনের যুক্তি ছিল যেহেতু কেদার চলতি বিশ্বকাপে সেভাবে ব্যাটিংয়ের সময় পাননি, তাই ধোনিকেই অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে স্ট্রাইক রেটের দিকে নজর দেওয়া উচিত ছিল। শেষ অবধি কেদার যাদব ৬৮ বলে ৫২ রান করেছিলেন।

ধোনির সমালোচনা করায় সচিনকে ট্রোল করে চলেছেন মাহি ভক্তদের একাংশ। সচিনও তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারে এমন ধীরগতির ইনিংস খেলেছেন বলে অভিযোগ করে টুইট করতে থাকেন তাঁরা। দেখুন তেমনই কিছু টুইট

এক টুইটার ইউজার লিখলেন, সচিন তো শুধু নিজের জন্য খেলতেন এবং নিজের ছেলেকে দলে ঢোকানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। ওঁর মুখে ধোনির মত ক্রিকেটের রাজার সমালোচনা মানায় না।

সচিন শুধু ব্যক্তিগত মাইলস্টোন গড়ার জন্য খেলতেন, যেখানে ধোনি শুধু দলের স্বার্থের কথা ভেবে খেলেন। এমন কথাও এক উগ্র মাহি ভক্ত লেখেন।

খামোকা এক টুইটার ইউজার, ধোনি ও সচিনের উপর তৈরি হওয়া বলিউড বায়োপিকের প্রসঙ্গ তুলে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ধোনিকে সবাই দেখতে মাঠে যান, সচিনের বেলা মাঠ ফাঁকা পড়ে থাকে। ধোনির বায়োপিক সচিনের থেকে বক্স অফিসে বেশি চলার কথা তুলে তিনি মাহিকে বড় করার চেষ্টা করেন।

নয়ের দশকে সচিনের স্ট্রাইক রেট মোটেও ভাল ছিল না বলে এক ইউজার তথ্য ছাড়াই কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ধোনির সৌজন্যেই সচিন বিশ্বকাপ জেতেন, তাই তাঁর অধিকার নেই মাহির সমালোচনা করার।

সচিন দুবার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেন। ২০০৩ ও ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল মিলে সচিনের মোট রান ২২ রান। সেখানে ধোনি একবারই ফাইনালে খেলে করেন ৯১ রান। তাই সচিনের চেয়ে ধোনি সেরা বলেন এক ইউজার।

ধোনিকে সচিনের সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রাদেশিকতার অভিযোগও তোলেন এক ইউজার। তিনি লেখেন, মুম্বইয়ের ক্রিকেটমহল ধোনিকে সহ্য করতে পারে না। তাই খারাপ দিনে সমালোচনা করলেন সচিন।

ধোনির ধীরগতির ইনিংসের পিছনে আবার এক ইউজার পিচের দোষ দেন।

সব মিলিয়ে ধোনির সমালোচনা করায় সচিনকে সমালোচনায় ক্ষতবিক্ষত করার চেষ্টা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অতীতে বিরাট কোহলিদের খারাপ পারফরম্যান্সের পরেও সচিন কখনও সেভাবে সমালোচনা করতেন না। সেভাবে দেখলে এই প্রথম দেশের কোনও তারকা ক্রিকেটারকে সামান্য সমালোচনা করেন সচিন। কিন্তু নেটিজেনরা বোঝাচ্ছেন ট্রোলের উর্ধ্বে কেউ নয়। তা তুমি যতই ঠিক কথা বল।



@endif