শরণার্থীদের নিয়ে অমানবিক আমেরিকা, নদী পেরোতে গিয়ে মৃত্যু বাবা-মেয়ের

তুরস্কের আলান কুর্দির স্মৃতিকে উসকে দিল, অস্কার-অ্যাঞ্জি।

এই সেই ছবি(Photo Credit: Twitter)

ওয়াশিংটন, ২৭জুন: মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের হটকারি সিদ্ধান্তের বলি বাবা ও মেয়ে। অস্কার আলবার্তো মার্তিনেজ ও তাঁর ২৩ মাসের শিশুকন্যা অ্যাঞ্জি ভালেরিয়া এম। এল সালভাডর দেশটিতে একন চরম বিশৃঙ্খলা, না খেতে পেয়ে মানুষ মরছে সেখানে আইনের শাসন বলে কিছু নেই, দুর্বলের উপরে সবলের অত্যাচার চলছে প্রতিনিয়ত। তাইতো অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে মেক্সিকো হয়ে আমেরিকায় ঢুকতে চেষ্টা করছেন। শরণার্থীর ভিড়ে সীমান্ত জমজমাট। আগেভাগেই সহযোগিতার হাত তুলে নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শরণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন যেখান থেকে এসেছো সেখানে ফিরে যাও। আরও পড়ুন-ইরাকে পাহাড়ে মূর্তির আকারে অবস্থান করছেন রামচন্দ্র, সত্যিই কি তাই?

এরপর থেকেই সীমান্ত জুড়ে কড়া প্রহরায় মার্কিন সেনা, তবুও যেনতেন প্রকারেণ আমেরিকায় ঢুকতে মেক্সিকো সীমান্তে শরণার্থীদের ভিড়। এদিকে সীমান্ত লাগোয়া এলাকার ভয়াবহ গরম সহ্য করতে না পেরে অনেকেই মৃত্যুকে বরণ করেছেন। মার্কিন অভিবাসন নীতি যত কড়া হচ্ছে ততই ঝুঁকি নিয়ে শরণার্থী যে যেখান থেকে পারেন আমেরিকায় ঢোকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর প্রাণের বিনিময়ে অনুপ্রবেশের মূল্য চোকাতে হচ্ছে। ১৪ জুন ৬ বছরের ভারতীয় শিশুকন্যা সীমান্ত পেরোতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে প্রাণ হারিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্তে মৃত্যু আরও বাড়বে। আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েও সাড়া পাচ্ছেন না বহু মানুষ। তাই যে করে হোক, ঢুকে পড়তে চাইছেন তাঁরা। সীমান্তে যতই বাড়ছে মৃত্যু মিছিল, ততই ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠছেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস। তিনি এক টুইটে বলেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর হিংসা থেকে বাঁচতে এই সব পরিবার পালিয়ে আসছে। তারা যখন আসছে, কী হচ্ছে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, যেখান থেকে এসেছো, ফিরে যাও। এটা অমানবিক। শিশুরা মারা যাচ্ছে। এই সব ঘটনায় আমাদের মানসিক তিক্ততা বাড়ছে।’’

এখন তো শরণার্থী বাবা-মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মার্কিন রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে রিয়ো গ্রান্দে নদীর জলে আটকে থাকা বাবা অস্কার ও মেয়ে অ্য়াঞ্জির উপুড় হওয়া ছবি। বাবার কালো গেঞ্জির ভিতর থেকে কাঁধে হাত দিয়ে পড়ে আচে ২৩ মাসের নিথর শরীরটা। দেহ দুটি মেক্সিকো সীমান্তে রিয়ো গ্রান্দে নদীর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে। ২০১৫-র তুরস্কের সৈকতকে মনে করায় এই ছবি। এরপর রাষ্ট্রপুঞ্জ নতুন করে অভিভাবসন নীতি ভাবলেও কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, তারই প্রমাণ দিল অস্কার অ্যাঞ্জির ছবি। এল সালভাডর থেকে আমেরিকায় আশ্রয় খুঁজতে এসেছিলেন। সীমান্ত পেরোতে গিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে জীবন। বেঁচে আছেন অ্যাঞ্জির মা, তানিয়া। গত রবিবার থেকে মাটামোরোসের শরণার্থী শিবিরেই ছিল পরিবারটি। মেক্সিকোর এক দৈনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রিয়ো গ্রান্দে নদী পেরোতে গিয়ে অস্কার স্ত্রীকেও আনার চেষ্টা করছিলেন। অ্যাঞ্জি বাবাকে সাঁতরে যেতে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে জলে। বাবা তাকে জড়িয়ে ধরেন, কিন্তু হঠাৎ ধেয়ে আসা স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাঁদের। জুলিয়া লু দুক নামে যে চিত্রগ্রাহক ছবিটি তুলেছেন, তিনিই গোটা ঘটনাটি লিখেছেন মেক্সিকোর দৈনিকে। চোখের সামনে স্বামী-মেয়েকে তলিয়ে যেতে দেখেন তানিয়া। মেক্সিকোয় দু’মাস ছিলেন। ৪৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের জ্বালাধরা গরম। শেষে আর সহ্য করতে না পেরে নদী পেরোনোর সিদ্ধান্ত নেন অস্কার। তাঁরা মেক্সিকোয় ‘মানবিক ভিসা’ পেয়েছিলেন বলে জানান তানিয়া।

(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)

Share Now

Share Now