Independence Day 2020: আজ ভারতের স্বাধীনতা দিবস, জেনে নিন ৫ মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদান

আজ ১৫ অগস্ট, ২০২০। দেশজুড়ে ৭৪তম স্বাধীনতা দিবস পালন হচ্ছে। এই ভাবে বহু রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ভারত স্বাধীন রাস্ট্রের মর্যাদা লাভ করেছেন। আজ এই স্বাধীনতাদিবসের প্রাক্কালে ভারতের সেই সকল বীর সন্তানদের প্রতি সশ্রদ্ধ প্রণাম। ৯৪৭ সালের বঙ্গভঙ্গ ভারত বিভক্তির ফলশ্রুতিতে সম্পন্ন হয়। এর ফলে বঙ্গ প্রদেশ দুই অংশে বিভক্ত হয়ে পরে যার পূর্বাঞ্চল পাকিস্তানে এবং পশ্চিমাঞ্চল ভারতের সাথে যুক্ত হয়। পূর্ববঙ্গের নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান রাখা হয় এবং যা পরবর্তীতে যুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ গঠন করে।

৫ মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী (Photo Credits: Wikimedia Commons, Twitter)

আজ ১৫ অগস্ট, ২০২০। দেশজুড়ে ৭৪তম স্বাধীনতা দিবস (Independence Day 2020) পালন হচ্ছে। এই ভাবে বহু রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ভারত স্বাধীন রাস্ট্রের মর্যাদা লাভ করেছেন। আজ এই স্বাধীনতাদিবসের প্রাক্কালে ভারতের সেই সকল বীর সন্তানদের প্রতি সশ্রদ্ধ প্রণাম। ৯৪৭ সালের বঙ্গভঙ্গ ভারত বিভক্তির ফলশ্রুতিতে সম্পন্ন হয়। এর ফলে বঙ্গ প্রদেশ দুই অংশে বিভক্ত হয়ে পরে যার পূর্বাঞ্চল পাকিস্তানে এবং পশ্চিমাঞ্চল ভারতের সাথে যুক্ত হয়। পূর্ববঙ্গের নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান রাখা হয় এবং যা পরবর্তীতে যুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ গঠন করে।

স্বাধীনতা সংগ্রামে যে নারীদের ভূমিকা রয়েছে তাঁর মধ্যে ৫ জন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য-

রাণী লক্ষ্মীবাঈ

লক্ষ্মী বাঈ ভারতবর্ষের ইতিহাসে বিপ্লবী নেত্রী হিসেবে চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে রয়েছেন। এছাড়াও তিনি ঝাঁসীর রাণী বা ঝাঁসী কি রাণী হিসেবেও সর্বসাধারণের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের অন্যতম প্রতিমূর্তি ও পথিকৃৎ হয়ে রয়েছেন তিনি। মারাঠা শাসনাধীন ঝাঁসী ভারতের উত্তরাংশে অবস্থিত। তাঁর আসল নাম মণিকর্ণিকা তাম্বে। বাবা কোর্টের কাজ-কর্মে জড়িত থাকায় রাণী লক্ষ্মী বাঈ ঐ সময়ের অধিকাংশ নারীদের তুলনায় অধিক স্বাধীনতা ভোগ করতে পেরেছিলেন। আত্মরক্ষামূলক শিক্ষালাভের পাশাপাশি ঘোড়া চালনা, আর্চারী শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি তার বান্ধবীদেরকে নিয়ে নিজস্ব একটি বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। রাণী লক্ষ্মী বাঈ ভারতবর্ষের 'জাতীয় বীরাঙ্গনা' হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান। তাঁকে ভারতীয় রমণীদের সাহসী প্রতীক ও প্রতিকল্প হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। সুভাষ চন্দ্র বসু'র নেতৃত্বাধীন আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রথম নারী দলের নামকরণ করেন রাণী লক্ষ্মী বাঈকে স্মরণপূর্ব্বক।

অরুণা আসাফ আলী

অরুণা আসফ আলী (১৯০৯-১৯৯৬) ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামী ও একজন সমাজকর্মী ছিলেন। অরুণা আসফ আলীকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালে জওহরলাল নেহরু পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৯৭ সালে ভারত সরকার তাকে দেশের সর্ব্বোচ্চ সম্মান ভারত-রত্ন উপাধিতে সম্মানিত করে আর ১৯৬৪ সালে তাকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় লেলিন শান্তি পুরস্কারে বিভূষিত করা হয়। সমাজে প্রগতি আর শান্তির চেষ্টার কারণে ১৯৫৫ সালে তাকে সোভিয়েট দেশে নেহরু পুরস্কারে সম্মানিত করে। তিনি দিল্লীর প্রথম মহিলা মেয়র ছিলেন। তিনি জাতীয় মহিলা ফেডারেশনের সভানেত্রীও ছিলেন। তিনি জাতীয় মহিলা কনফারেন্সের সাথে জড়িত থাকার কারণে দিল্লী কংগ্রেস কমিটীর সভানেত্রী হন।

ইন্দিরা গান্ধী

ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ইন্দিরা গান্ধী। তিনি ভারতের প্রথম ও আজ পর্যন্ত একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী। প্রভাবশালী নেহেরু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করায়, তিনি এক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠেন। তার পিতামহ মতিলাল নেহেরু একজন প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা ছিলেন। তার পিতা জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তার ছেলে রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৪১ সালে অক্সফোর্ড থেকে ফিরে এসে ইন্দিরা গান্ধী পিতার সাথে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫০ সাল থেকে অপেশাগত ভাবে জওহরলাল নেহেরুর অফিস সহকারীর কাজ করে আসছিলেন। ১৯৬৪ সালের জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর পর ভারতের রাষ্ট্রপতি তাকে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তখন ইন্দিরা লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মন্ত্রীসভায় তথ্য ও প্রচার মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

সরোজিনী নাইডু

সরোজিনী নায়ডু ছিলেন স্বনামধন্য ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিশিষ্ট বাগ্মী ও ইন্দো-অ্যাংলিয়ান কবি। তিনি ভারতীয় কোকিল (দ্য নাইটেঙ্গেল অফ ইন্ডিয়া) নামে পরিচিত। সরোজিনী নায়ডু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হন। স্বাধীন ভারতে তিনি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজ্যপালও হয়েছিলেন। সরোজিনী নায়ডু ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে তিনি যোগ দেন ডান্ডি পদযাত্রায়। গান্ধী, আব্বাস তয়েব ও কস্তুরবা গান্ধী গ্রেফতার হলে তিনি ধারাসন সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেন। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাগ্মী এবং ইংরেজি ভাষার যশস্বী কবি।

কল্পনা দত্ত

কল্পনা দত্ত ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি চট্টগ্রাম বিপ্লবের একজন অন্যতম বিপ্লবী নেত্রী। অবিভক্ত বাংলার (বর্তমানে বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলা -এর শ্রীপুর গ্রামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে তার জন্ম হয়। শহীদ ক্ষুদিরাম এবং বিপ্লবী কানাইলাল দত্তের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি বেথুন কলেজ-এ গড়ে ওঠা ছাত্রী সংঘ-এ যোগদান করেন। পূর্ণেন্দু দস্তিদারের মাধ্যমে তিনি মাস্টার দা সূর্য সেনের সাথে পরিচিত হন এবং মাস্টার দা প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখা-য় যোগদান করেন। তার বিপ্লবী মনভাবের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে 'অগ্নিকন্যা' বলেছেন।



@endif