Govardhan Puja 2022: নির্দিষ্ট তিথি বদলে কবে হবে গোবর্ধন পূজা ? কীভাবেই বা করবেন গোবর্ধন পূজা? পূজার তাৎপর্য সহ জেনে নিন

ন্দ্রদেবের অহংকার দূর করতে এবং ব্রজবাসীদের রক্ষা করতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতকে হাতের সবচেয়ে ছোট বা কড়ে আঙুল দিয়ে তুলে নেন। তখন সমস্ত ব্রজবাসী গোবর্ধন পর্বতের নীচে আশ্রয় নেয়। সেখানেই চলে গোবর্ধন পুজো।

হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে গোবর্ধন পূজা করা হয়। অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই উৎসব পালিত হয়। এই বছর ২৪ অক্টোবর দিওয়ালি। সেই অনুযায়ী, ২৫ অক্টোবর গোবর্ধন পূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তবে এবার দীপাবলি এবং গোবর্ধন পূজার মধ্যে একটি সূর্যগ্রহণ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই বছর সূর্যগ্রহণের কারণে দীপাবলির পরের দিন ২৫ অক্টোবর গোবর্ধন পূজা অনুষ্ঠিত হবে না। তাঁর বদলে এ বছর আগামী ২৬ অক্টোবর পালিত হবে এই উত্‍সব।

গোবর্ধন পূজা পদ্ধতি

এই দিন গিরিরাজ অর্থাত গোবর্ধন পর্বত ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হয়। শুধু তাই নয়, এই দিন অন্নকূট পুজোও পালিত হয়। কারণ এই দিন অন্নকূট নিবেদনের প্রথা রয়েছে।গোবর্ধন পূজার দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে নিন। অতঃপর শুভ সময়ে গোবর দিয়ে গিরিরাজ গোবর্ধন পর্বতের আকৃতি তৈরি করুন এবং গবাদি পশু যেমন গরু, বাছুর ইত্যাদির আকৃতি করুন। অতঃপর ধূপ-প্রদীপ প্রভৃতি দিয়ে যথাযথভাবে পূজা করুন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দুধ দিয়ে স্নান করে তার পূজা করুন। এরপর অন্নকূট নিবেদন করুন।

গোবর্ধন পূজার মুহূর্ত

এ বছর ২৬ অক্টোবর গোবর্ধন পূজা। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথি শুরু হচ্ছে ২৫ অক্টোবর বিকেল ৪টা ১৮ মিনিটে। এই তারিখ ২৬ অক্টোবর দুপুর  ২.৪২ এ শেষ হবে। এদিন পূজার শুভ সময় হবে সকাল ৬.২৯ থেকে ৮.৪৩ মিনিট পর্যন্ত।

গোবর্ধন পুজোর কাহিনী

কথিত আছে, গোবর্ধন পুজোর কাহিনি জড়িয়ে রয়েছে সেই দ্বাপর যুগ থেকে।একদিন শ্রী কৃষ্ণ দেখেন, যে সমস্ত ব্রজবাসীরা বিভিন্ন ধরণের খাবার তৈরি করছেন, পূজার মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে এবং সকাল থেকেই পুজোর সামগ্রী সংগ্রহে ব্যস্ত সবাই। তখন শ্রী কৃষ্ণ যশোদাকে জিজ্ঞেস করেন, “মায়া” কার পূজার জন্য আজ এই সমস্ত মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছে? যশোদা সেইসময় বলেন যে ব্রজবাসী ইন্দ্রদেবের পূজার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখন কৃষ্ণ বললেন কেন সব মানুষ ইন্দ্রদেবের পূজা করছে? এ কথা শুনে মা যশোদা তাকে বলেন, ইন্দ্রদেব আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। সেই কারণেই খাদ্য উৎপাদন ভাল হয় ও গরুর চরণভূমিও বিস্তৃত হয়। যশোদার কথা শুনে কৃষ্ণ বলেন, বৃষ্টি বর্ষণ করা ইন্দ্রদেবের কর্তব্য। আমরা যদি পূজা করতে চাই, তবে আমাদের গোবর্ধন পর্বতে করা উচিত। কারণ আমাদের গরু সেখানে চরে এবং আমরাও গোবর্ধন পর্বত থেকে ফল, ফুল, শাকসবজি ইত্যাদি পাই। এরপর ব্রজবাসী কৃষ্ণের কথায় মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রদেবের পরিবর্তে গোবর্ধন পর্বতের পুজো শুরু করেন। দেবরাজ ইন্দ্র এই কর্মকীর্তিকে ভাল চোখে দেখেননি। অপমান মেনে নেননি তিনি। গ্রামবাসীদের কর্মকাণ্ডে ক্রদ্ধ হয়ে প্রলয়ঙ্করী মুষলধারে বৃষ্টি শুরু করেন। যার ফলে চারদিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বন্য়া পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিবার-পরিজন বাঁচাতে সবাই এদিক ওদিক ছুটতে থাকে। তখন ব্রজবাসীরা এই বিপর্যয়ের জন্য শ্রীকৃষ্ণকেই দোষারোপ করতে থাকেন। কৃষ্ণের আনুগত্য করার কারণেই এ সব হয়েছে। তাঁর কথায় কাজ করে এখন ইন্দ্রদেবের ক্রোধ বহন করতে হবে সকল গ্রামবাসীকে।এর পর ইন্দ্রদেবের অহংকার দূর করতে এবং ব্রজবাসীদের রক্ষা করতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতকে হাতের সবচেয়ে ছোট বা কড়ে আঙুল দিয়ে তুলে নেন। তখন সমস্ত ব্রজবাসী গোবর্ধন পর্বতের নীচে আশ্রয় নেয়। সেখানেই চলে গোবর্ধন পুজো। এর পর ইন্দ্রদেব তার ভুল বুঝতে পেরে শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা চান ও বর্ষণ করা বন্ধ করেন। এই পৌরাণিক কাহিনির ভিত্তিতেই শুরু হয় গোবর্ধন পুজো।