Jyoti Basu's Death Anniversay: তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়েছিলেন জ্যোতি বসু
সালটা ছিল ১৯৭৭, বাংলায় ক্ষমতায় এল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি(Communist Party)। ১৯৭৭ বিধানসভা নির্বাচনে সাতগাছিয়া থেকে জিতলেন জ্যোতি বসু। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল সিপিআইএম(CPIM), বাংলার নেতৃত্বে এল বামফ্রন্ট সরকার। বাংলার প্রথম কমিউনিস্ট মুখ্যমন্ত্রী হলেন জ্যোতি বসু। সেই শুরু, টানা ২৩ বছর, ২০০০ সাল পর্যন্ত চলে 'মুখ্যমন্ত্রী সফর'। দেশের দীর্ঘতম মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রীর রেকর্ড গড়েছেন জ্যোতি বসু(Jyoti Basu)।
কলকাতা, ১৭ জানুয়ারি: সালটা ছিল ১৯৭৭, বাংলায় ক্ষমতায় এল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি(Communist Party)। ১৯৭৭ বিধানসভা নির্বাচনে সাতগাছিয়া থেকে জিতলেন জ্যোতি বসু। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল সিপিআইএম(CPIM), বাংলার নেতৃত্বে এল বামফ্রন্ট সরকার। বাংলার প্রথম কমিউনিস্ট মুখ্যমন্ত্রী হলেন জ্যোতি বসু। সেই শুরু, টানা ২৩ বছর, ২০০০ সাল পর্যন্ত চলে 'মুখ্যমন্ত্রী সফর'। দেশের দীর্ঘতম মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রীর রেকর্ড গড়েছেন জ্যোতি বসু(Jyoti Basu)।
লন্ডনে আইন পড়তে পড়তেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। ১৯৪০ সালে দেশে ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন জ্যোতিবাবু। শ্রমিক নেতা হিসেবে শুরু হয় জ্যোতি বসুর রাজনৈতিক জীবন। ৬০-র দশক বেশ কিছুটা কঠিন ছিল জ্যোতি বসুর কাছে। চিন-ভারত সীমান্তে সংঘর্ষের সময় কমিউনিস্ট পার্টির উপর চলে হামলা। কখনও "চিনের দালাল" আবার কখনও "দেশদ্রোহী" আখ্যাতে রাস্তায় পোড়ানো হত জ্যোতি বসুর কুশপুত্তলিকা।
১৯৬৫-৬৬-র মধ্যে খাদ্য আন্দোলন, বন্দিমুক্তি আন্দোলন, ট্রামভাড়া বৃদ্ধি-সহ একাধিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন জ্যোতি বসু। জ্যোতি বসুর মূল পুঁজি ছিল তাঁর নেতৃত্বের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা। আরও পড়ুন: Jammu & Kashmir Police Bust Jaish Module: প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে জঙ্গি হামলার ছক বানচাল, জম্মু-কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার ৫ জইশ জঙ্গি
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও প্রস্তাব এসেছিল একাধিকবার জ্যোতি বসুর কাছে। এমনকী খোদ রাজীব গান্ধির প্রস্তাব পেয়েও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কারণ দলের আপত্তি ছিল। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন জ্যোতি বসু। এই সুযোগ হাতছাড়া করার জন্য আফসোস করেছেন তিনি। কাছের মানুষদের বারবার বলতেন 'ঐতিহাসিক ভুল' এটা।
তবে দলের প্রতি জ্যোতি বসু সবসময় তাঁর দায়বদ্ধতা বজায় রেখেছেন। দলের কাজে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন তিনি। বিধানসভার সদস্য হিসেবে মাসের রোজগার ছিল মাত্র আড়াইশো টাকা। সেখান থেকে একটি মোটা টাকা চলে যেত পার্টি ফাণ্ডে। এরপর মাস-মাইনে বেড়েছিল ঠিকই। কিন্তু সংসারের বরাদ্দ টাকা বাড়েনি। বরং পার্টি ফাণ্ডের টাকাটা বেড়ে গিয়েছিল আরও বেশ কিছুটা। সেই সময় সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব ছিল জ্যোতি বসুর। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একে অপরের বিরুদ্ধে হলেও বন্ধুত্ব ছিল তাঁদের মজবুত। মাঝে মধ্যেই জ্যোতি বসুর বাড়িতে আসতেন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। আর উঁকি মারতেন তাঁদের রান্নাঘরে। ডাল ভাত আর বেগুন ভাজা। এই-ই মূলত মেনু থাকত জ্যোতি বসুর রান্নাঘরে। টাকার অভাবে দু'বেলা দু'মুঠো রান্না করাই কঠিন হয়ে পড়ত। বারবার এমনভাবেই দু:খ প্রকাশ করতেন জ্যোতি বসুর স্ত্রী কমলা বসু।
রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকলেও সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল জ্যোতি বসুর।বাংলাদেশ যুদ্ধের আগে সিদ্ধার্থশঙ্কর এবং জ্যোতি বসু বৈঠকে বসেছিলেন ইন্দিরা গান্ধির বাড়িতে। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা গণিখান চৌধুরিকেও তিনি পরিবারের সদস্য মানতেন, ডাকতেন 'সাহেব' বলে।
জ্যোতি বসু ছিলেন স্টার রাজনৈতিক নেতা। রাস্তা-ঘাটে চলতে গেলেই এদিক ওদিক থেকে তাঁর ফ্যানেরা চলে আসতেন এবং ছবি কিংবা অটোগ্রাফ চাইতেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলি এড়িয়ে যেতেন জ্যোতি বসু। পার্টিতে যোগ দেওয়ার আগে পরের সময়টাতে ব্যারিস্টার জ্যোতি বসু ট্রামে-বাসে পার্টির পত্রিকাও বিক্রি করেছেন। রেলওয়ে শ্রমিকদের সংগঠিত করতে নানা জায়গায় ঘুরেছেন, শ্রমিক বস্তিতে থেকেছেন জ্যোতি বসু।
২০০০ সালে আচমকাই অসুস্থ হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন জ্যোতি বসু। তবে দলের আপত্তিতে বেশ কয়েকটা মাস পিছিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ইস্তফা দেওয়ার সময়সীমা। তাঁর সংবর্ধনা সভা হয় জলপাইগুড়িতে, সংবর্ধনার জায়গা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে দোমহনিতে রেলশ্রমিক আন্দোলনের হাত ধরেই প্রথম রাজনৈতিক সংগ্রামে নেমেছিলেন জ্যোতি বসু।
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২০১০ সালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি। ১৭ জানুয়ারি আমরি হাসপাতালে সতেরো দিনের লড়াই শেষে মৃত্যু হয় জ্যোতি বসুর।
(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)