Kishore Kumar Birthday: তাঁর গানের সুরে মাতিয়ে রেখেছেন আট থেকে আশি সকলকে, কিন্তু গানের সময় মজা করতে ভুলতেন না তিনি! জন্মদিনে রইল কিছু অজানা গল্প

Photo Credit_Latestly media.com

কিশোর কুমার মানেই সুরের জাদু। সারা জীবন ধরে তিনি মাতিয়ে রেখেছেন ভারতীয় শ্রোতাকে। তিনি একাধারে যেমন ছিলেন গায়ক ও তেমন ছিলেন গুণী অভিনেতা। আজও সঙ্গীতপিপাসুরা তাঁর সুরের জাদুতে আচ্ছন্ন হয়ে আছেন! ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন ভীষণ রসিক মানুষ।গানের রেকর্ডিং এর সময় মাঝে মাঝেই ঘটত বিভিন্ন মজার ঘটনা আজ জন্মদিনের সকালে জানব তাঁর জীবনের কিছু মজার ঘটনাঃ

রেকর্ডিংয়ের সময় সবাইকে হেডফোন পরতে হয়। এমনই একদিন কানে হেডফোন লাগিয়ে সবাই বসে আছেন স্টুডিওতে। কিশোর কুমারের সঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের দ্বৈত গান। কিশোর কুমারের অংশ গাওয়া হয়ে গেছে। এবার লতা মঙ্গেশকরের পালা। কিন্তু কিশোর কুমার নাচের এমন সব ভঙ্গি করছেন যে, লতা মঙ্গেশকর গান গাইবেন কি, কিছুতেই হাসি চেপে রাখতে পারছেন না।

আগে যতই মজা করুন না কেন, রেকর্ডিং শুরুর কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ বদলে যেতেন কিশোর কুমার। শুধু তাই নয়। বাড়িতে নিজে গানটা তুলেই ফোন করতেন শচীন দেব বর্মন অথবা পঞ্চমকে। বারবার শোনাতেন। গানের ব্যাপারে যতক্ষণ সাড়া না পেতেন, ততক্ষণ টেনশনে থাকতেন তিনি। বারবার জিজ্ঞাসা করতেন, ঠিক হচ্ছে তো? রেকর্ডিং শেষ করেই দ্রুত বাড়ি চলে যেতেন। শুনতেনও না। বলতেন, ‘গানটা এখন আর শুনবো না। আপনারাই বলবেন কেমন হয়েছে।’

‘শোলে’ ছবির ‘মেহবুবা ও মেহবুবা’ গানটি কিন্তু কিশোর কুমারেরই গাওয়ার কথা ছিলো। তার বাড়িতে গানটি তৈরি হচ্ছে। গানটি পঞ্চম যেভাবে গাইছিলেন তিনি সেভাবে তুলতে পারছিলেন না। বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর হঠাৎ কিশোর কুমার বলে উঠলেন, ‘পঞ্চম, যাই বলো, এই গানটা আমার থেকে তোমার গলায় অনেক ভালো লাগছে। এটা তুমিই গেয়ে দাও।’

এমনই আর একটি গান ‘ক্যারাভান’ ছবির ‘পিয়া তু অব তো আ যা’। আশা ভোঁসলে ও পঞ্চমের দ্বৈত গান। হওয়ার কথা ছিলো কিশোর কুমার ও আশা ভোঁসলের। কিন্তু এই গানের মাঝে একটা শ্বাসের অংশ আছে। সেটি কিছুতেই আসছিল না কিশোরের। এক সময় হাল ছেড়ে দিয়ে পঞ্চমকে বললেন, ‘বুঝলে, এটা তুমিই গেয়ে দাও’। আর একটা গান ছিলো ‘দিল সে দে’। এই গানটাও কিশোর কুমারের অনুরোধে গেয়েছিলেন পঞ্চম। এখনকার দিনে এই কথা ভাবাও যায় না।

কিশোর কুমার কোনো কনসার্টে গান করার আগে মঞ্চের মাপ জেনে নিতেন। বলতেন, ‘আমার বড় স্টেজ চাই। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি গাইতে পারবো না। আমি নেচে-কুঁদে গাইবো।’ আর মঞ্চে তিনি এমন সব কাণ্ড-কারখানা করতেন যে, বাদকরাও বাজনা থামিয়ে হাঁ হয়ে দেখতেন।

কিশোর কুমার হারমোনিয়াম ভালো বাজাতে পারতেন না। বাজাতে গিয়ে ভুল হলে হাল ছেড়ে দিয়ে খালি গলায় গেয়ে দিতেন। সিঙ্কোপ্যাটেড নোটস থাকলে যেন দম আটকে আসতো!

‘কটি পতঙ্গ’ ছবির ‘ইয়ে যো মহব্বত হ্যায়’ গানটি কিশোর কুমার প্রথম ফোনে শোনেন। শুণেই দারুণ খুশি। গানের দৃশ্যে নায়ক মাতাল হয়ে গানটি করবেন। সেই অভিব্যক্তি তিনি অনায়সে গানে তুলে আনলেন। অথচ জীবনে কখনো মদ ছুঁয়েও দেখেননি তিনি। শুধু চা খেতেন। কোনদিন মদ না খেয়েও এভাবে গানের মধ্যে নেশা ফুটিয়ে তোলা যায়, সেটা কিশোর কুমার ছাড়া আর আরো পক্ষে সম্ভব নয়।

গানের মাঝে কিছু কিছু কথা কিশোর কুমার নিজে থেকেই জুড়ে দিতেন। গাওয়ার আগে কার লিপে গানটা থাকবে, ছবিতে তার চরিত্র কেমন, পরিস্থিতি কী, অথবা গানে কোন ধরণের ঘটনা দেখা যাবে- সব কিছু মাথায় রাখতেন তিনি।