Global Hunger Report 2022: বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ফের অবনতি ভারতের, এগিয়ে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা

সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২২ সালের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেস্ক (Global Hunger Index) অনুযায়ী, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ফের অবনতি হল ভারতের। প্রতিবেশী পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কারও পরে স্থান পেল।

(Representational Image only) Photo Credits: PTI

নয়াদিল্লি: সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২২ সালের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেস্ক (Global Hunger Index) অনুযায়ী, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ফের অবনতি হল ভারতের (India)। প্রতিবেশী পাকিস্তান (Pakistan), বাংলাদেশ (Bangladesh), নেপাল (Nepal) এবং শ্রীলঙ্কারও (Srilanka) পরে স্থান পেল। গতবারের প্রকাশিত রিপোর্টের থেকে এক ধাক্কায় ৬ ধাপ নিচে নেমে ১২১টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান হল ১০৭। দক্ষিণ এশিয়াতে (South Asia) অবস্থিত অন্য প্রতিবেশীদের মধ্যে তালিবানের হাতে থাকা আফগানিস্তান ছাড়া সবাই বিশ্ব ক্ষুধার সূচকে ভারতের থেকে এগিয়ে রয়েছে। যদিও এই রিপোর্টকে সম্পূর্ণ মিথ্যে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে।

গতবছরের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের ১২১টি দেশের মধ্যে ভারত ছিল ১০১ নম্বর স্থানে। কিন্তু, মাত্র একবছরের মধ্যে তারা ৬ ধাপ নিচে নেমে গেছে বলে এই বছরের প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ১২১ দেশের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৬৪ নম্বরে, নেপাল ৮১ নম্বরে, বাংলাদেশ ৮৪ নম্বরে ও পাকিস্তান রয়েছে ৯৯ নম্বরে। একমাত্র আফগানিস্তান ভারতের মাত্র ২ ধাপ পিছনে অর্থাৎ ১০৯ স্থানে রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী চিন ও কুয়েত সবথেকে ভালো স্থানে আর ইয়েমেন রয়েছে সব থেকে খারাপ জায়গায়।

গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের স্কোর চারটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সেগুলি হল, অপুষ্টি (undernourishment), শিশুদের বৃদ্ধিতে বাধা (child stunting), শিশু অপচয় (child wasting), ও শিশুদের মৃত্যুহার (child mortality)। এই ইনডেস্কে নম্বর দেওয়ার বিষয়টি মূলত নির্ভর করে ক্ষুধার তীব্রতার (severity of hunger) উপর। ১০০ নম্বরের এই হিসাবে শূন্য হল সবথেকে ভালো স্থান আর খারাপ হল ১০০। সেখানে ২০১৪ সালের ২৮.২-এর জায়গায় ২৯.১ নম্বর পেয়ে ক্ষুধার সূচকে ভারত গুরুতর জায়গায় রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই রিপোর্টে। সেখানে চিন পাঁচের কম নম্বর পেয়ে স্থান পেয়েছে ১ থেকে ১৭-এর মধ্যে।

২০২২ সালের প্রকাশিত ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে শিশুদের উচ্চতার থেকে ওজন কম হওয়ার পরিমাণ ২০১৪ সালে যেখানে ১৫.১ শতাংশ ও ২০০০ সালে ১৭.১৫ শতাংশ ছিল। ২০২২ সালে এসে দাঁড়িয়ে তা খারাপ হয়ে ১৯.৩ শতাংশে পৌঁছেছে। যা বিশ্বের সব দেশের থেকে খারাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দাবি করা হয়েছে ভারতে যেখানে ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ১৪.৬ শতাংশ খিদের জ্বালা ও অপুষ্টিতে ভুগছিলেন তা ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বেড়ে ১৬.০৩ শতাংশে পৌঁছে গেছে। গোটা পৃথিবীর খিদের জ্বালায় ভোগা ৮২৮ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে ভারতেই রয়েছে ২২৪.৩ মিলিয়ন মানুষ। তবে অন্য দুটি বিষয়, যেমন অপুষ্টির কারণে বয়সের তুলনায় ভারতে শিশুদের বৃদ্ধির হার ২০১৪ সালে যেখানে ৩৮.৭ শতাংশ ছিল তা ২০২২ সালে ৩.২ শতাংশ কমে ৩৫.৫ শতাংশ হয়েছে। আর শিশু মৃত্যুর হার ৪.৬ থেকে কমে হয়েছে ৩.৩ শতাংশ।

যদিও গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের এই তথ্য মানতে নারাজ ভারত। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই রিপোর্টকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই রিপোর্ট যেমন বাস্তব সত্যের উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়নি। তেমনি ভারত সরকার নিজের দেশের জনগণকে খাদ্যের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যে পরিশ্রম করেছে তাকেও অস্বীকার করা হয়েছে।