LOK SABHA ELECTIONS 2019: কোন রাজ্যে কটা আসন, কারা এগিয়ে-এক নজরে

এক নজরে জেনে নিন কোন রাজ্যে কটা লোকসভা আসন, কারা এগিয়ে

উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) : (৮০টি আসন)

দেশের সবচেয়ে বেশি লোকসভা (Lok Sabha)  আসন এই রাজ্যেই আছে। কথায় বলে- ইউপি জিসকা-দেশকা কুর্সিকা উসকা। এত আসনের রাজ্যে যারা বাজিমাত করে, তারা দেশের ক্ষমতা দখলে অনেকটা এগিয়ে যায় সেটা স্বাভাবিক। গতবার যেমন, বিজেপি (BJP) ইউপি-র ৮০টি আসনের মধ্যে ৭৩টি জিতে দেশের ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। এবার বিজেপি-র কাজটা এই রাজ্যে খুব কঠিন। কারণ নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) কে হারাতে এখানে রাজ্যের সব বড় যুযুধান দল-তাদের আগের সব তিক্ততা ভুলে হাত মিলিয়েছে। মহাগটবন্ধন নামে বিজেপিকে হারাতে নেমেথেন অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav) -মায়াবতী (Mayawati)। সপা (SP) -বসপা (BSP) জোটের কারণেই এই রাজ্যে মোদী ঝড় নিয়ে সন্দেহ আছে। বিজেপি-র আসন এ রাজ্যে কমবে সেটা নিশ্চিত, তবে সেটা কতটা কমবে সেটাই দেখার।

মহারাষ্ট্র (Maharastra) : (৪৮টি আসন)

গতবার পশ্চিম ভারতের আসনে বিজেপি জিতেছিল ২৩টি আসন। আর বিজেপি-র জোটসঙ্গী শিবসেনা (Shiv Sena) ১৮ ও স্বভূমি পক্ষ পেয়েছিল ১টি আসন। তার মানে ৪৮টির মধ্যে এনডিএ-জিতেছিল ৪২টি আসন। সেখানে কংগ্রেস (Congress) -এনসিপি (NCP) জোট মাত্র ৬টি। এরপর এই রাজ্যে বিজেপি একাই ক্ষমতা দখল করে। শিবসেনা এনডিএ ছাড়ে। তবে লোকসভা ভোটের আগে শিবসেনা ফের এনডিএ-তে ফেরে। মহারাষ্ট্রে এবার বিজেপি-র লড়াই কঠিন, বেশ কঠিন।

বাংলা: (৪২টি আসন)

গোটা দেশ তাকিয়ে বাংলার দিকে। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ (Amit Shah) জুটি বারবার ছুটে এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee)- কে নজিরবিহীনভাবে আক্রমণ করেছেন। তৃণমূল ছেড়ে আসা মুকুল রায়ের সাহায্যে দিদির অন্দরমহলে ফাটল ধরিয়ে বাংলায় ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখছেন মোদী (Modi)। এদিকে দিদির চ্যালেঞ্জ বিজেপি ( Bengal BJP) এখানে একটা আসনও পাবে না। বাংলার ৪২টি আসনে বিজেপি গতবার জিতেছিল দুটি আসন। এবার কটা? সেই দিকেই তাকিয়ে দেশ।

বিহার (৪০টি আসন)

২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বিহারে নরেন্দ্র মোদী সুনামী উঠেছিল। বিহারে এনডিএ গতবার জিতেছিল ৩১টি, তার মধ্যে বিজেপি একাই জিতেছিল ২২টি। সেখানে কংগ্রেস মাত্র দুটি আসন পেয়েছিল। তবে এবার বিহারে মোদী বিরোধী হাওয়া আছে। শত্রুঘ্ন সিনহা-র দল ছাড়াটাও ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে।

তামিলনাডু (Tamil Nadu) (৩৯টি আসন)

দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে এবারের লোকসভা ভোটের তাতপর্য অন্যরকম। রাজ্যের কিংবদন্তি দুই নেতা করুনানিধি (Karunanidhi) -জয়ললিতা (Jayalalitha) র মৃত্যুর পর এই প্রথম নির্বাচন তামিলনাড়ুতে। এআইএডিএমকে (AIADMK)  -র সঙ্গে জোট বেধে নামছে বিজেপি। যেখানে কংগ্রেস লড়ছে ডিএমকে (DMK)-র সঙ্গে জোট বেঁধে। বিজেপি এখান থেকে পাঁচটা আসনে লড়ছে, এআইডিএমকে লড়ছে ২০টি আসনে। বাকি ১৪টি আসনে লড়ছে এনডিএ-র শরিক দল ডিএমডিকে, পিএমকে (PMK), তামিল মানিলা কংগ্রেস (TMC)-র মত দলগুলো লড়ছে। অন্যদিকে, ডিএমকে (DMK) লড়ছে ২০টি আসনে, কংগ্রেস (Congress) ১০টি আসনে, বাকি আসনগুলিতে লড়ছে ইউপিএ (UPA) জোটে থাকা বাম দল (Left Parties) গুলি, কেডিএমকে, আইইউএমএল-এর মত দলগুলি। এবার এই রাজ্যে ডিএমকে-কংগ্রেসের পক্ষে হাওয়া আছে বলে জনমত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে।

মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) (২৯টি আসন)

এই রাজ্যে ২৭টি আসনে জিতে নরেন্দ্র মোদী চমকে দিয়েছিলেন, সেখানে কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ২টি আসনে। কিন্তু ক মাস আগেই এই রাজ্যে দীর্ঘদিন বাদে কংগ্রেস ক্ষমতায় ফেরে। এবার মধ্যপ্রদেশে কঠিন লড়াই।

কর্নাটক (karnataka) (২৮টি আসন)

দক্ষিণ ভারতের একমাত্র রাজ্যেই বিজেপি-র ক্ষমতা দখলের ইতিহাস আছে। যদিও ক মাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি তখত হারায়। গতবার এই অঞ্চল থেকে ২৮টি-র মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ১৭টি আসন, সেখানে কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৯টি আসন। এবার কংগ্রেস-জেডিএস (JDU) জোট মজবুত হয়েছে। ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী (H. D. Kumaraswamy)-র বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে ঝড় উঠেছে। এবার এখানে লড়াই সমানে সমানে।

গুজরাট (Gujrat) (২৬টি আসন)

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে গতবার সব আসনে জিতেছিল বিজেপি। মোদী সুনামীতে সেবার বিরোধীরা তছনছ হয়ে গিয়েছিল। তবে এরপর কংগ্রেস দারুণভাবে ফিরে এসে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে দারুণ ফল করেছিল, যদিও ক্ষমতায় ফের বিজেপিও এসেছিল। এবার গুজরাটে লড়াই ৫০:৫০।

রাজস্থান (২৫টি আসন)

গতবার থর মরভূমির এই সুন্দর রাজ্যে বিজেপি সব কটা আসনে জিতেছিল। তবে ক মাস আগে এই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতা হারায়। রাজস্থানে ক্ষমতায় ফিরে কংগ্রেস দারুণরকম টগবগে। তবে মোদীর পক্ষে ভাল খবর হল রাজস্থানে বিজেপি ক্ষমতা হারালেও ফল কিন্তু একেবারে খারাপ হয়নি।

অন্ধ্রপ্রদেশ (২৫টি আসন)

অন্ধ্রপ্রদেশে গতবার বিজেপি ভোটে লড়েছিল চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে। তাতে বিজেপি জিতেছিল ২টি, টিডিপি জিতেছিল ১৫টি আসন। এবার টিডিপি একেবারে বিজেপি বিরোধী। এই রাজ্যের লড়াই টিডিপি বনাম ওয়াইএসআর কংগ্রেসের।

ওডিশা (২১টি আসন)

পুরী মন্দিরের এই রাজ্যে পদ্ম এবার বড় করে ফুটবে, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ত্রিপুরা মডেলে ওডিশা-তে নবীন পট্টনায়েককে হারিয়ে বিজেপি রেকর্ড সংখ্যাক আসন পাবে এমনটা আশা মোদী-শাহ-র। গতবার ওডিশায় ২১টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০টিতে জিতেছিল নবীন পট্টনায়েকের দল বিজেডি, আর একটি আসন জিতেছিল বিজেপি। এবার বিজেপি আসন কটা বাড়াতে পারে সেটাই দেখার।

কেরালা (২০টি আসন)

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই রাজ্য থেকে ভোটে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণার পর দক্ষিণের এই রাজ্যের দিকে গোটা দেশের নজর। বিজেপি এখানে সেভাবে কোনও ফ্যাক্টর নয়। এই রাজ্যে কংগ্রেস-বামেদের সরাসরি লড়াই হয়। যদিও বিজেপি এখানে ছাপ ফেলতে কোমর বেঁধে নেমেছে। গতবার কংগ্রেস জিতেছিল ৮টি আসন, বামেরা জিতেছিল ৬টি আসন। এবার বিজেপি এখানে খাতা খুলতে মরিয়া। কংগ্রেস চাইছে এখান থেকে ১৫-১৭টি আসন জিততে। বামেদের আবার এটাই শেষ গড়। বামেরা মরিয়া হয়ে লড়ছে।

তেলেঙ্গানা (১৭টি আসন)

কেসিআর-এর রাজ্যে বিজেপি গতবার একটা আসন জিতেছিল। কংগ্রেস পেয়েছিল ১টা। সেখান কেসিআর-এর টিআরএস পেয়েছিল ১১টা আসন। এবারও টিআরএস এখানে অনেক আসন জিতবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। তবে বিজেপি তলায় তলায় শক্তি বাড়িয়ে কটা আসন বের করতে পারে সেটাই দেখার।

ঝাড়খণ্ড (১৪টি আসন)

ঝাড়খণ্ডে গত লোকসভা ভোটে বিজেপি ক্লিন সুইপ করেছিল। ১৪টি-র মধ্যে ১২টি-তে জিতেছিল বিজেপি।

অসম- ১৪টি আসন

অসমের নির্বাচনে এবার একটা ইস্যু এনআরসি। তবে তাতে কী রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি-কে নাড়ানো যাবে! সেটাই দেখার। গতবার বিজেপি জিতেছিল ৭টি আসন, কংগ্রেস ৩টি। কংগ্রেসের দাবি এবার সেই সংখ্যাটা ঘুরে যেতে পারে। যদিও জনমত সমীক্ষায় বিজেপিকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে।

ছত্তিশগড় (১১টি আসন)

গতবার বিজেপি এখানে ১০টি আসনে জিতে বাজিমাত করেছিল, কংগ্রেস সেখানে মাত্র ১টা আসন জিতেছিল। কিন্তু ক মাস আগে বিধানসভা নির্বাতনে খুব খারাপভাবে হেরে এই প্রথম এই রাজ্যে ক্ষমতা হারায় বিজেপি। এবার খুব চাপ আছে বিজেপির। কংগ্রেসের লক্ষ্য থাকবে গতবারের শূন্যতা কাটিয়ে যত বেশি সম্ভব আসনে জেতা।

পঞ্জাব (১৩টি আসন)

সানি দেওলের মত তারকা প্রার্থী দিয়েও বিজেপি এই রাজ্যে ভাল জায়গায় নেই। গোটা দেশে খারাপভাবে হারলেও পঞ্চনদের দেশ কিন্তু হাত ধরে আছে। গত লোকসভা নির্বাচনে এনডি-এ জিতেছিল ৬টা আসন। আপ পেয়েছিল ৪টি, কংগ্রেস ৩টি আসন। সিধুর মত বিজেপি বিক্ষুব্ধ নেতাকে পাশে পেয়ে কংগ্রেস এখান থেকে ভাল ফলের আশায়।

হরিয়ানা (১০টি আসন)

গতবার এই রাজ্যে ৭টি আসনে জিতেছিল বিজেপি, ২টি-তে জাতীয় লোক দল, একটিতে জেতে কংগ্রেস। এবার হরিয়ানায় কংগ্রেস ভাল ফলের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে নরেন্দ্র মোদীও নাকি নিশ্চিত গতবারের চেয়ে বিজেপি এখানে ভাল ফল হবে।

জম্মু - কাশ্মীর (৬টি আসন)

পুলওয়ামা কাণ্ডের ছায়া এবারের জম্মু-কাশ্মীরের ভোটে কতটা প্রভাব পড়ে সেটাই দেখার। গতবার বিজেপি ঝড়ে কংগ্রেস-জম্মু কাশ্মীর ন্যাশানাল কংগ্রেস শূন্য হয়ে গিয়েছিল। সেখানে বিজেপি জিতেছিল ৩টি আসন, পিডিপি জিতেছিল ৩টি।

উত্তরাখণ্ড (৫টি আসন)

হিমাচল প্রদেশ (৪টি আসন)

ত্রিপুরা (২টি আসন)

মনীপুর (২টি আসন)

অরুণাচল প্রদেশ- ২টি আসন

মেঘালয় (২টি আসন)

গোয়া ২টি আসন

মিজোরাম (১টি আসন)

নাগাল্যান্ড (১টি আসন)

সিকিম (১টি আসন)

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল

দিল্লি (৭টি)

আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (১টি)

চণ্ডীগড় (১টি)

দাদরা এবং নাগর হাভেলি (১টি)

লাক্ষাদ্বীপ (১টি)

পুদুচেরী (১টি)



@endif