এই এনআরসি-র প্রয়োজন নেই যেখানে প্রকৃত ভারতীয়রাই বাদ পড়েছেন, চূড়ান্ত তালিকায় হতাশ মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
অসমে চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকা থেকে ১৯ লক্ষ লোক বাদ পড়েছেন। যখন এনআরসির (NRC) খসড়া প্রকাশিত হয়েছিল তখন বাদ গিয়েছিলেন ৪০ লক্ষ লোক। এবার সেই তালিকা ঝাড়াই বাছাই করেই চূড়ান্ত প্রকাশ। তবে নাগরিক পঞ্জির এই নয়া তালিকাকে সিলমোহর দিলেন না অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (BJP leader Himanta Biswa Sarma)।
গুয়াহাটি, ৩১ আগস্ট: অসমে চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকা থেকে ১৯ লক্ষ লোক বাদ পড়েছেন। যখন এনআরসির (NRC) খসড়া প্রকাশিত হয়েছিল তখন বাদ গিয়েছিলেন ৪০ লক্ষ লোক। এবার সেই তালিকা ঝাড়াই বাছাই করেই চূড়ান্ত প্রকাশ। তবে নাগরিক পঞ্জির এই নয়া তালিকাকে সিলমোহর দিলেন না অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (BJP leader Himanta Biswa Sarma)। তিনি বলেছেন, ‘রাজ্য থেকে বিদেশি নাগরিকদের তাড়ানোর ক্ষেত্রে এই তালিকা কোনও কাজ দেবে না। বর্তমানে যে নাগরিকপঞ্জী তৈরি হচ্ছে তাতে আমার কোনও আশা নেই। খসড়া তালিকা তৈরি হওয়ার সময় থেকেই তা বলছি। প্রকৃত নাগরিকরা বাদ পড়ছেন। তাহলে কীভাবে মেনে নেব এটি রাজ্যের মানুষদের ভালোর জন্য তৈরি হয়েছে?’
এই প্রবীণ নেতা আরও বলেছেন, ‘আমরা আর এনআরসি-তে আগ্রহী নই। বাংলাদেশ (Bangladesh) সীমান্ত ঘেঁসা দক্ষিণ সালমারা (South Salmara), ধুবড়ির (Dhubri) মতো এলাকায় অনুপ্রবেশকারী লোকজনের বাদ পড়ার হার সবচেয়ে কম। তার থেকে যেসব জেলায় প্রকৃত অসমিয়ারা বসবাস করেন সেখানে বাদ পড়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কীভবে এটা হতে পারে? বৈধ নাগরিকদের চিহ্নিত করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাতিল করার ক্ষেত্রে এই তালিকা কতটা সহযোগী হবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’ আরও পড়ুন-অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ বাদ পড়লেন ১৯ লক্ষ, ক্ষোভ আশঙ্কায় দোদুল্যমান উত্তর-পূর্ব ভারত
উল্লেখ্য, এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কায় থাকা নাগরিকদের অবশ্য আশ্বস্তই করছে সরকার। তালিকায় নাম না থাকলে কী করতে হবে সে প্রক্রিয়াও জানানো হয়েছে। তালিকায় নাম না থাকা নাগরিকদের ২০ দিনের মধ্যে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে (Foreigner Tribunals) আবেদন করতে হবে। এই সময়সীমা আগে ছিল ৬০ দিন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে শুনানির জন্য রাজ্যজুড়ে ১ হাজার ট্রাইব্যুনাল গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যেই ১০০ ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। আরও ২০০টি ট্রাইব্যুনাল সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই খোলা হবে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে এটাও জানানো হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে মামলাটি হেরে যান, তিনি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হতে পারেন। এদিন সময় যত এগিয়েছে অসমজুড়ে নেমে এসেছে আশঙ্কা আর উদ্বেগের ছায়া। একটা প্রশ্নই ঘুরে বেড়াতে থাকে, চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকবে তো? তালিকা প্রকাশের পর বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা করেই গোটা রাজ্যকে নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। রাজ্য জুড়ে ৬০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আরও ২ হাজার আধাসেনা পাঠিয়েছে কেন্দ্র।