All About AI- History, Removal of Sam Altman:সিইও পদ থেকে স্যাম অল্টম্যানকে বরখাস্ত করল ওপেনএআই, ঠিক কী কারণে অপসারণ? (দেখুন বিস্তারিত)
৩৮ বছর বয়সি অল্টম্যান খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গোটা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছিলেন চ্যাটজিপিটির দৌলতে। তাঁর সংস্থার তৈরি এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স চ্যাটবক্স অবাক করা সব কাজ করে দেখিয়েছে বিগত এক বছরে।
আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে চ্যাট জিপিটি (ChatGPT) লঞ্চ করে গোটা দুনিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল ওপেন এ আই(OpenAI)। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সির দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছিল এই প্রযুক্তি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সির এই বৃহৎ কর্মকান্ডে বড় অবদান ছিল স্যাম অল্টম্যানের। কিন্তু সম্প্রতি তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানি।শুক্রবার একটি গুগল মিটে ডেকে ওপেন এ আই এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যানকে এই পদ থেকে সরানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্যাম অল্টম্যান বরখাস্ত হতেই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন গ্রেগ ব্রকম্যানও। সিইও পদ থেকে অপসারণের মূল কারণ হিসাবে বোর্ডের সাথে অল্টম্যানের লেনদেনে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্পষ্টতার অভাবকে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে তার পদত্যাগের পিছনে অন্যান্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে ব্যাপক জল্পনা রয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কী কারণে সিইও পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন স্যাম অল্টম্যান?
স্যামকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওপেনএআই কোম্পানির বোর্ড সদস্যরা। যাদের মধ্যে রয়েছেন কোম্পানির প্রধান বিজ্ঞানী ইলিয়া সুটস্কেভার, Quora-এর সিইও অ্যাডাম ডি’অ্যাঞ্জেলো, প্রযুক্তি উদ্যোক্তা তাসা ম্যাককলি এবং জর্জ সেন্টার ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলোজির হেলেন টোনার।বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, সিইও’র আচরণে খুশি নয় কোম্পানি। তাঁর প্রতি ভরসা হারিয়েছে বোর্ড সদস্যরা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী যে পরিষেবার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ওপেনএআই তা পরিচালনায় ব্যর্থ স্যাম অল্টম্যান। যে কারণে এই পদ হারাতে হয়েছে তাঁকে। স্যামের পাশাপাশি নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন গ্রেগ ব্রকম্যান। তাঁর ছাড়ার পিছনে যে কারণটি বলা হচ্ছে, তা হল স্যাম অল্টম্যানের মতো তাঁর প্রতিও ভরসা হারিয়েছে কোম্পানি।স্যাম অল্টম্যানকে বরখাস্ত করার খবর আসার পরই পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যদিও সম্পূর্ণভাবে ওপেনএআই এর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙছেন না গ্রেগ ব্রকম্যান। প্রেসিডেন্ট পদে ইস্তফা দিলেও কোম্পানির সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
চ্যাটজিপিটির ইতিহাসঃ-
৩৮ বছর বয়সি অল্টম্যান খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গোটা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছিলেন চ্যাটজিপিটির দৌলতে। তাঁর সংস্থার তৈরি এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স চ্যাটবক্স অবাক করা সব কাজ করে দেখিয়েছে বিগত এক বছরে। কবিতা লেখা থেকে শুরু করে গল্প লেখা বা অ্যাপ্লিকেশন লিখে দেওয়া, পরীক্ষার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মতো কাজ সেকেন্ডে করে ফেলে এই চ্যাটবক্স।২০১৫ সালে আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্ক, লিঙ্কডইনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যান এবং আরও কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে ‘ওপেনএআই’ নামে একটি কৃত্রিম মেধা গবেষণা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন স্যাম। স্যাম সেই সময় দাবি করেন, এআই ব্যবহার করে মানব জাতির উপকার করা এই সংস্থা তৈরির মূল লক্ষ্য।২০১৬ সালে স্যাম ঘোষণা করেন, ‘ওপেনএআই’ এমন একটি কৃত্রিম মেধা তৈরি করছে যার বুদ্ধি মানুষের বুদ্ধির সঙ্গে মেলে। সংস্থার তরফে এই কৃত্রিম মেধার নাম দেওয়া হয় জিপিটি-১।২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি ‘ওপেনএআই’ আরও একটি কৃত্রিম মেধা ‘দাল-ই’ তৈরির কথা ঘোষণা করে যা ব্যবহারকারীর বর্ণনার ভিত্তিতে ছবি আঁকতে সক্ষম।গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববাজারে সকলকে চমক দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ওপেনএআই-এর কৃত্রিম মেধা ‘চ্যাটজিপিটি’। এটিই এখনও পর্যন্ত তৈরি হওয়া সবচেয়ে উন্নত মানের কৃত্রিম মেধা নির্ভর চ্যাটবট বলে মনে করা হচ্ছে। ছবি আঁকা, কথা বলা, গান শোনানোর মতো একাধিক কাজ করতে সক্ষম ‘চ্যাটজিপিটি’।
এদিকে পদ খুঁইয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ মুখ খোলেন অল্টম্যান। সংক্ষিপ্ত বার্তায় তিনি লেখেন, 'ওপেনএআই-তে কাজ করার সময়টা আমার দুর্দান্ত কেটেছে। ব্যক্তিগত ভাবে এটা খুব অনন্য এক অভিজ্ঞতা ছিল। আমার সব কিছু বদলে গিয়েছিল। এবং আশা করছি এই পৃথিবীরও কিছুটা এতে বদলেছে। এত জ্ঞানীগুণী মানুষের সঙ্গে কাজ করতে আমার খুবই ভালো লেগেছে।'
মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কোম্পানির দুই শীর্ষ কর্তার এই সিদ্ধান্তে হতবাক গোটা টেক দুনিয়া। এই পরিস্থিতিতে ওপেনএআই এর প্রধান বিনিয়োগকারী মাইক্রোসফটের উপর চাপ বাড়তে শুরু করেছে।স্যাম অল্টম্যানের পর, ওপেনএআই এর সিইও পদে যোগ দিয়েছেন মিরা মুরাতি। তিনি এর আগে কোম্পানির চিফ টেকনোলজি অফিসার (CTO) হিসাবে কাজ করছিলেন। অন্তর্বর্তীকালীন সিইও হিসাবে এই পদ সামলাবেন মিরা মুরাতি।