Durga Puja 2020: শিয়রে করোনার কাঁটা, শোভাবাজার রাজবাড়ির ছোট তরফের পুজোয় এবার বাইরের লোকের প্রবেশ নিষেধ
মহামারীর ভয়াবহতাকে সঙ্গে নিয়েই বাপের বাড়ি আসছে উমা। মায়ের আগমনে কলকাতার আনাচে কানাচে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বারোয়ারি পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। সেই সঙ্গে বনেদি বাড়ির পুজোয় তোরজোরও চলছে জোর কদমে। তবে করোনাকালে এতদিন ধরে চলে আসা সমস্ত নিয়মের মাঝেই পড়েছে সাবধানতার লাগাম। সেই আঁচ থেকে বাদ পড়ল না উত্তর কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজোও (Shobhabazar Rajbari Durgapuja)। বড় তরফ ও ছোট তরফের পুজোতেও থাকছে করোনা সতর্কতা।
মহামারীর ভয়াবহতাকে সঙ্গে নিয়েই বাপের বাড়ি আসছে উমা। মায়ের আগমনে কলকাতার আনাচে কানাচে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বারোয়ারি পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। সেই সঙ্গে বনেদি বাড়ির পুজোয় তোরজোরও চলছে জোর কদমে। তবে করোনাকালে এতদিন ধরে চলে আসা সমস্ত নিয়মের মাঝেই পড়েছে সাবধানতার লাগাম। সেই আঁচ থেকে বাদ পড়ল না উত্তর কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজোও (Shobhabazar Rajbari Durgapuja)। বড় তরফ ও ছোট তরফের পুজোতেও থাকছে করোনা সতর্কতা। ছোটতরফের পুজোয় এবার বাইরের লোকের প্রবেশের অনুমতি নেই। বাড়ির লোকেদের দিয়ে দেওয়া হচ্ছে পরিচয়পত্র। তাঁরাও সেটা দেখিয়েই শুধু প্রবেশ করতে পারবেন।
অন্যদিকে বড় তরফের পুজোয় কোনও দিন বাড়ির সদর দরজা বন্ধ হয়নি। তাই এবারেও করা হচ্ছে না। তাই গেটের কাছে বসানো হবে স্যানিটাইজিং টানেল। এর মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পরে থার্মাল চেকিং করা হবে দর্শনার্থীদের। মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব মেনে তবেই ঢোকা যাবে পুজোয়। তবে বাড়ির লোক ছাড়া আর কেউই ঠাকুরদালানে উঠতে পারবেন না। রথের দিন বড় তরফের পুজোর কাজ শুরু হয়ে যায়। দেবীর যে পা সিংহের উপরে থাকে রথের দিন সেই বাঁশটিতেই হয় কাঠামো পুজো। তারপর কুমোরকে প্রতিমা নির্মাণের জন্য বাঁশটি দিয়ে দেওয়া হয়। ১৭৫৭ সালে শোভাবাজার রাজবাড়ির বড় তরফের পুজো শুরু হয়েছিল। সেই থেকেই একই কাঠামোতে চলছে প্রতিমা নির্মাণ। অন্যদিকে রাজবাড়ির ছোটতরফের কাঠামো পুজো হয় উল্টো রথের দিন। মহালয়ার দিন দেবীর চক্ষুদান করা হয়।
শোভাবাজার রাজবাড়ির দুই তরফের প্রতিমা একচালার হয়। আগে জার্মানি থেকে অর্ডার দিয়ে ডাকের সাজ আনানো হত। সেই প্রথা বহুদিন আগে বন্ধ হওয়ার পরে কৃষ্ণনগরের শিল্পীরাই পরম যত্নে দেবীর সাজ বানিয়ে দেন। তবে দুই তরফেই প্রথম থেকেই পুজোর পোশাক হয় রাজস্থানী ঘরানার। বড় তরফের সিংহের গায়ের রং সাদা। মুখ ঘোড়ার মতো। ছোট তরফের সিংহের চেহারা কিন্তু আলাদা। মুখ অনেকটা সিংহির মতো, গায়ের রং রূপোলি। আগে বিদেশ থেকে রুপোর পাত এনে সিংহের গা মুড়ে দেওয়া হত প্রতিবছর। সেই পাত-সহই প্রতিমা বিসর্জন হত। এখন আর তা সম্ভব হয় না। তবে সিংহের গায়ের রং এখনও প্রথা মেনে রুপোলিই রাখা হয়। ষষ্ঠীর দিন দেবীকে গয়না পরান পরিবারের সদস্যরা। রুপোর অস্ত্রশস্ত্র ওঠে দেবীর হাতে।
সপ্তমী অষ্টমী এবং নবমীতে দেবীকে চেলীর শাড়ি দেওয়া হয়। বড়তরফে সন্ধি পুজোয় কখনও দেওয়া হয় চাঁপা ফুল রংয়ের শাড়ি, কখনও বা ভোরের আকাশের মতো নীল শাড়ি। পুজোর সময়ে বড় তরফের গৃহদেবতা রাধা-গোবিন্দজিউকে উপরে নিয়ে যাওয়া হয়। একইভাবে ছোটতরফের গোপীনাথজিউকেও উপরে নিয়ে যাওয়া হয়। আগে দুই বাড়ির সন্ধিপুজোর সূচনা হত কামান দেগে। সারা শহরের মানুষ জানতেন অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তির জয় নিশ্চিত-কামান জানান দেয় সে কথাই। তবে সময়ের সঙ্গে সহ্গে সেসব প্রথা বন্ধ হয়েছে। তবে ছোট তরফে পুজোর সূচনা উপলক্ষে ষষ্ঠীর দিন এখনও শূন্যে গুলি ছোঁড়া হয়।