Durga Puja 2019: দুগ্গা মায়ের ১০৮টি পদ্ম চাই-ই চাই, তাই বাঁকুড়ার পুকুর থেকে কমল চলল বিলেতে

রামচন্দ্র শরৎকালে দেবীর অকাল বোধন করেছিলেন। দেবী দুর্গাকে তুষ্ট করতে ৩০৮টি পদ্ম (Lotus flowers) অর্পণ করেছিলেন। তাই দুর্গাপুজোতে (Durga Puja) পদ্মফুলের বিশেষ চাহিদা রয়েছে।

জলাশয়ে পদ্ম(Photo Credit: Pixabay

পুজো এসেছে, আর মাত্র ১৫টা দিন, বাঙালি শারদীয়া উৎসবকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই আনন্দে মেতেছে। আকাশে বাতাসে সেই আনন্দের সুর। ঝকঝকে নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভেসে চলেছে। মাঝে মাঝেই নির্মল রোদ্দুরে ধুয়ে যাচ্ছে চরাচর। পুজো আসছে। শপিং থেকে খাওয়াদাওয়া, পার্লার থেকে উপহার কোথাও সামান্য খামতি থাকুক কেউ চাইছেন না। কেননা পুজো তো বছরে একবারই আসে, তাই কোনওরকম ফাঁকি দিয়ে তা চলে যাক, এমন ধারা বাঙালির বরদাস্ত হবে না। তেমনই উমা মায়ের আরাধনাতেও সব নিয়ম মাফিক হওয়া  চাই।  রামচন্দ্র শরৎকালে দেবীর অকাল বোধন করেছিলেন। দেবী দুর্গাকে তুষ্ট করতে ১০৮টি পদ্ম (Lotus flowers) অর্পণ করেছিলেন। তাই দুর্গাপুজোতে (Durga Puja) পদ্মফুলের বিশেষ চাহিদা রয়েছে।

এমনিতেই প্রবাসে বাঙালি এখন দুর্গাপুজোতে মাতলেও তা কলকাতার স্বাদ এনে দিতে পারে না। দিনক্ষণ মিলিয়ে ষষ্ঠী থেকে বিজয়া হবে তা-ও সম্ভব নয়। বিদেশ বিভুঁইয়ে তাই সাপ্তাহিক ছুটিই ভরসা। সে নিউইয়র্ক হোক বা লন্ডন, নিউজার্সি বা টরন্টো, বাঙালি শনি রবিতেই দুর্গাপুজোকে বেঁধে ফেলেছে। পুরোহিত থেকে পুজোর উপচার মায় প্রতিমা সবই জাহাজে চড়ে কলকাতা থেকে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। এবার পদ্মফুল চলল বিলেতে। এই দুর্মূল্যের বাজারে যখন অর্থনীতির মন্দাগতি জনমনে বিষাদের ছায়া ফেলেছে তখন বাঁকুড়ার চাষির হাতে তৈরি জলপদ্ম পাড়ি দিচ্ছে লন্ডন। বিশ্বকর্মা পুজো কাটলেই ১৩ হাজার পদ্মফুল লন্ডনের উদ্দেশে রওনা করিয়ে দিতে হবে। এমন বরাত পেয়েছেন বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের ফুলচাষি রামপদ দাস। প্রায় ৪০ বিঘা জলশয় লিজে নিয়ে পদ্ম চাষ করেন রামপদবাবু। একবার দুবার নয়, দীর্ঘ ৪০টা বছর এই কাজ করছেন তিনি। পরম নিষ্ঠায় জল স্থলে ফোটাচ্ছেন ফুল। নিত্যপুজো থেকে দুর্গার আরাধনা সবেতেই তাঁর তৈরি ফুল বন্দিত হচ্ছে। এবার রামপদবাবুর ফোটানো পদ্ম পাড়ি দিচ্ছে লন্ডনে, সুদূর লন্ডন নিয়ে রামপদ দাসের কোনও আগ্রহ নেই। তিনি জানেনও না এই জায়গাটি আসলে কোথায়। শুধু জানেন সেখানে তাঁর পদ্মের ক্রেতা আছেন। তাইতো পরম যত্নে পদ্মকে আগলে রেখেছেন। আরও পড়ুন-Durga Puja 2019: দুজনে মুখোমুখি আর মাটির ভাঁড়ে তন্দুরি চা, তৃষ্ণা মেটাতে পুজো আসছে

এমনিতে ফুল চাষ করেই জীবীকা নির্বাহ করেন রামপদ দাস, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকার মতো অনেক রকমের ফুল তিনি ফুটিয়ে বেড়ান। এই শীত পড়ছে তাঁর বাগান ফের ফুলে ভরে উঠবে। ভাবতেই মনটা আনন্দে ভরে যায়। সন্ধ্যা নামছে চরাচড় জুড়ে গোধূলির কণে দেখা আলোকে পিছনে ফেলে পদ্ম ছেড়ে পাড়ে উঠেএলেন রামপদ, এবার তো বাড়ি ফেরার পালা। মা আসছেন।