সুন্দরবন মানেই ইলিশ মাছের ডিনার সেরে লঞ্চে নিশিযাপন, এই বুঝি বাঘমামা এল
পাহাড় তো সবসময় ডাকে, সমুদ্রও তাই। আর যদি জঙ্গল ডাকে? ভয় পাবেন না, প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বাংলায় জঙ্গলও দেখার মতো। ঘরের কাছেই রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপের অংশ সুন্দরবন। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার স্রোতে তৈরি সুন্দরবনে খাল বিল নদী নালার অভাব নেই। এই ম্যানগ্রোভ অরণ্যে এখনও প্রচুর জায়গা রয়েছে যেখানে মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি।
ছুটিতে ছোটাছুটি করবেন না তো কবে করবেন, তবে সেই ছোটাছুটি যদি হয় বেড়াতে যাওয়ার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সপ্তাহান্তে ছুটি মিলতেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়ুন দেখি মন এমনিই ভাল হয়ে যাবে। আমাদের বাংলায় দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই শুধু খুঁজেপেতে যাওয়ার উদ্যোগ করতে হবে এই যা। করে ফেললেই হল, তারপর শুধু হারিয়ে যাওয়ার পালা। আজ রইল টইটইয়ের চতুর্থ পর্ব।
সুন্দরবন(Sundarbans National Park)
পাহাড় তো সবসময় ডাকে, সমুদ্রও তাই। আর যদি জঙ্গল ডাকে? ভয় পাবেন না, প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বাংলায় জঙ্গলও দেখার মতো। ঘরের কাছেই রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপের অংশ সুন্দরবন। গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার স্রোতে তৈরি সুন্দরবনে খাল বিল নদী নালার অভাব নেই। এই ম্যানগ্রোভ অরণ্যে এখনও প্রচুর জায়গা রয়েছে যেখানে মানুষের পদচিহ্ন পড়েনি।ইউনেস্কো একে হেরিটেজ সাইট(Heritage site) ঘোষণা করলেও দুভাগে বিভক্ত সুন্দরবনের ৬০ শতাংশই বাংলা দেশের অধীনে। বাকিটা পশ্চিমবঙ্গে. সুন্দরী গাছের আধিক্যে বনভূমির সার্থক নামকরণ সুন্দরবন। সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র ও নানা ধরনের পশুপাখি রক্ষা করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে চলেছে ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদ(Mangrove Forest)। প্রায় ৩৬৪ রকম উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া সুন্দরবনের পরিচিত গাছ হল গরান, গেঁওয়া, সুন্দরী ও কেওড়া।সুন্দরবনের খালে বিলে ১৫০ রকমের মাছে, গাছগাছালিতে ২৭০ রকমের পাখির দেখা মেলে। আর রয়েছে বাংলার গর্ব রয়্যালবেঙ্গল টাইগার, যাকে কথ্য ভাষায় বলা হচ্ছে সোঁদর বনের বাঘ। বাঘ ছাড়াও বাদাবনে প্রায় ৪২ রকমের স্তন্যপায়ী প্রাণীর অস্তিত্ব রয়েছে। প্রতিবছর গভীর জঙ্গলে মৌমাছির চাক ভাঙতে গিয়ে বা মাতলা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কতজন যে বাঘের থাবার মুখে পড়েন তার লেখাজোকা নেই।
এই সুন্দরবনকে উপলব্ধি করে হলে লঞ্চে রা্ত্রিবাস সব থেকে রোমাঞ্চের। শিয়ালদা থেকে ট্রেনে ক্যানিং এসে সেখান থেকে নদীপথে চলে আসুন গোসাবা। তারপর লঞ্চ বদলে ব্যঘ্র সংরক্ষণ এরিয়ার কাছাকাছি। মাতলা ভেসে ভেসে যদি বাঘ দেখতে পারেন তাহলতে কোথাই নেই। অন্যদিকে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক শোভ উপভোগ করতে চলে যান ঝড়খালি, সজনেখালিতে। সেখানে রয়েছে রাজ্য সরকারের গেস্ট হাউস, অতিথিগৃহ দুটো দিন বেশ আনন্দেই কাটবে। আর বাঘ এলে তো উপরি পাওনা।
চন্দ্রকোনা(Chandrakona)
ইতিহাসকে কাছ থেকে ছুঁতে হলে আপনাকে দুই মেদিনীপুর ঘুরে দেখতেই হবে। স্বাধীনতা সংগ্রামী থেকে শুরু করে প্রাচীন ভারতের রাজবংশ সবেরই উপস্থিতি এখানে। এই সুযোগে ঘুরে আসুন চন্দ্রকোনা। মল্লরাজাদের রাজত্বের চিহ্ন এখনও মাথা উঁচিয়ে আপনাকে স্বাগত জানাবে। সেখানে দেখতে পাবেন, তিনটি প্রাচীন দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। লালগড়, রামগড় ও রঘুনাথগড়(Raghunathgarh)। আরেকটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষও এখানে পাওয়া গিয়েছে। এটির নাম বারো দুয়ারি দুর্গ।হিন্দু পুরোহিতদের তিনটি আস্তানা, যার বেশিরভাগট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কোনও কোনওটা আবার কিছুটা পুনর্নির্মিত হয়েছে। এছাড়া এখানে রয়েছে শিখদের উদাসিনী মঠ। কংসাবতী, শিলাবতী,( river Shilaboti) বকদ্বীপ ও মহাদলঘাট দিয়ে ঘেরা পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত চন্দ্রকোনা একচি প্রাচীন জনপদ।মধ্যদেশের ব্রাহ্মণরা এখানে থাকতেন। মূল্যবান কাপড়ের জন্য এই অঞ্চল বিখ্যাত ছিল। চন্দ্রকোনা ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো জনপদ।এক সময় এখানে ‘ভন্দেশ’ নামে একটি জনপদ ছিল।
গড়বেতা(Garhbeta)
চন্দ্রকোনারই প্রতিবেশী হল গড়বেতা। অতীতে গড়বেতা অত্যন্ত সমৃদ্ধ নগর ছিল। এটি ছিল বাগরি পরগনার অন্তর্গত। বাগরি শব্দটি এসেছে বকডিহি থেকে। মহাভারতে বর্ণিত বক রাক্ষসের সঙ্গে গড়বেতা বা বাগরির সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়।পঞ্চদশ শতাব্দীতে রাজপুত রাজা গজপতি সিং স্থানীয় অনার্য শাসককে পরাজিত করে বাগরি অঞ্চলে নয়া রাজত্ব কায়েম করেন। তিনি রয়কোটা দুর্গ নামে একটি দুর্গ বানিয়েছিলেন। শীলাবতী নদীর তীরে সেই দুর্গের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। ইতিহাসে আগ্রহ থাকলে ঘুরে আসতে পারেন গড়বেতা, চন্দ্রকোনায়।হাওড়া থেকে বাঁকুড়া যাওয়ার ট্রেনে উঠে চন্দ্রকোনা ও গড়বেতায় যেতে পারেন। ট্রেনে যাওয়াই যুক্তিযুক্ত হবে।
(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)