কলকাতা, ১৬ জানুয়ারি: শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে আলোচনার পর মানভঞ্জন হয় সাংসদ শতাব্দী রায়ের (Shatabdi Roy)। বৃহস্পতিবার থেকে টানা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পর শুক্রবার রাতে কুণাল ঘোষ, অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে মিটিংয়ের পর ইউটার্ন নেন শতাব্দী। এরপর আজ শতাব্দী রায় ফ্যান ক্লাবের ফেসবুক পোস্টে তিনি তৃণমূলে থাকারই সিদ্ধান্ত জানান।
ফেসবুকে তৃণমূল সাংসদ লেখেন,"বীরভূমের নাগরিকদের প্রতি-আজ একটি পোস্ট করব বলেছিলাম। এই লেখার মাধ্যমে আমার বক্তব্য জানাচ্ছি। আমাকে কয়েকজন প্রশ্ন করছিলেন কেন এলাকার বহু কর্মসূচিতে আমাকে দেখা যাচ্ছে না। অথচ আমি তো চাই এলাকার মানুষের পাশে থাকতে। কিছু সমস্যা হচ্ছে। কিছু যন্ত্রণা অনুভব করছিলাম। চেষ্টা করছি সব বাধা টপকে এলাকায় সবসময় থাকার। বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়েছিলাম আপনাদের। এই সূত্রেই কিছু বহুমুখী ঘটনা ঘটছিল। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল পরিবারের প্রিয় নেতা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে। আমি সমস্যার জায়গাগুলি জানিয়েছি। তিনিও শুনেছেন এবং আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা ইতিবাচক। সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী। সামনে নির্বাচন। যাঁরা তৃণমূলের কর্মী বা নেতা, আমার মতই তাঁদের কিছু ক্ষোভ বা বক্তব্য থাকতেই পারে। আমরা সেগুলি দলের মধ্যেই মেটাবো। ভোটে জয়ের পর পর্যালোচনা করব। এখন সবাই হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করার সময়। আসুন সবাই মমতাদির নেতৃত্বে তৃতীয় তৃণমূল সরকার গঠনের লক্ষ্যে বাংলার স্বার্থে কাজ করি। আমি যখন তৃণমূলে এসেছিলাম তখন সিঙ্গুর আন্দোলন চলছে। দল ক্ষমতায় নেই। কঠিন সন্ধিক্ষণ। শুধু দলকে ভালোবেসে, মমতাদিকে ভালোবেসে আমি এসেছিলাম। আজ আবার যখন সবাই বঙ্গরাজনীতির সন্ধিক্ষণ বলছেন, তখন আমার দলের মঞ্চ থেকেই লড়াই করার কর্তব্য থেকে পিছিয়ে যাব না। আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ দিচ্ছি। যেভাবে তিনি সমস্যা শুনেছেন, আলোচনা করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, তাতে আমি নিশ্চিত তরুণ নেতাটি এখন যথেষ্ট দায়িত্বশীল ও পরিণত। নতুন প্রজন্মের এমন নেতার নেতৃত্ব দলকে শক্তিশালী করবে। তৃণমূল কংগ্রেস আবার জিততে চলেছে। আমি দলের সৈনিক হিসেবে আমার কর্তব্য পালন করে যাব। সেই সঙ্গেই আরও বেশি করে নিবিড়ভাবে থাকব আমার বীরভূমের মানুষের পাশে। ভালো থাকবেন। পাশে থাকবেন। সর্বস্তরের তৃণমূল পরিবারের সদস্যদের আবার বলছি, যদি কারুর কোনো ক্ষোভ থাকে, এতদিন যখন সেসব নিয়ে পথ চলেছি, এখন ভোটের মুখে প্রতিপক্ষের সুবিধে করে না দিয়ে, আসুন, বাংলার স্বার্থে আমরা গোটা তৃণমূল পরিবার এক হয়ে লড়াই করি।" আরও পড়ুন, আগামিকাল দিল্লি যাচ্ছেন না শতাব্দী রায়, অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে মিটিংয়ের পর সিদ্ধান্ত
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছিলেন, শনিবার দিল্লি যাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল তাঁর। শুক্রবার জল্পনা জিইয়ে রেখে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, দিল্লি যাচ্ছি, পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হতেই পারে। দেখা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’ তিনি আরও জানান, এলাকায় যেভাবে যেতে চাইছেন, সেভাবে পারছেন না। মনে হচ্ছে নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনও লাভ হবে না।