Dilip Ghosh: মেদিনীপুর থেকে বর্ধমানে গিয়ে ভোটে লড়ে জিততে পারবেন দিলীপ ঘোষ? কী বলছে অঙ্ক
আর চেনা মেদিনীপুর নয়, এবার একেবারে অচেনা বর্ধমান-দুর্গাপুর। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-কে মেদিনীপুর থেকে সোজা বর্ধমানে লড়তে পাঠিয়ে দিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
পার্থ প্রতিম চন্দ্র: আর চেনা মেদিনীপুর নয়, এবার একেবারে অচেনা বর্ধমান-দুর্গাপুর। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)-কে মেদিনীপুর থেকে সোজা বর্ধমানে (Bardhaman Durgapur Lok Sabha) লড়তে পাঠিয়ে দিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। গতবারের মত আর মেদিনীপুর নয়, দিলীপ ঘোষকে লড়তে দেখা যাবে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসন থেকে। মেদিনীপুরের বাইরে এই প্রথম ভোট যুদ্ধে লড়তে চলেছেন দিলীপ। খড়গপুর সদরে কংগ্রেসের অতি জনপ্রিয় নেতা জ্ঞান সিং সোহনপাল-কে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে হারিয়ে নির্বাচনী যুদ্ধ শুরু হয়েছিল দিলীপের। ভোট যুদ্ধে যেখানে দাঁড়িয়েছেন সেখানে সোনা ফলিয়েছেন। ২০১৯ লোকসভা ভোটে মেদিনীপুরের মত কঠিন কেন্দ্রে, মানস ভুঁইয়া-র মত পোড়খাওয়া নেতাকে হারিয়ে লোকসভা ভোটে জিতেছিলেন দিলীপ। যে মেদিনীপুরে ২০১৪ লোকসভায় বিজেপি মাত্র ১ লক্ষ ৮০ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিল, সেখানেই পাঁচ বছর পর দিলীপ পদ্মশিবিরকে জেতান ৬ লক্ষ ৮৫ হাজারের বেশী ভোট পেয়ে। এবার দিলীপের সামনে বর্ধমানের কঠিন চ্যালেঞ্জ।
২০১৯ লোকসভায় বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভায় বিজেপির টিকিটে সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া জিতলেও, জয়ের ব্যবধানে একেবারে কম ছিল। তার ওপর আবার গতবার এখানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পুরো ফায়দা তোলার সুযোগ পেয়েছিল বিজেপি। সেখানে এবার বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ-কে প্রার্থী করার পর তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল কিছুটা কম। বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভার সাতটি লোকসভার মধ্যে ৬টি-তেই তৃণমূলের বিধায়ক, একমাত্র দূর্গাপুর-পশ্চিমে বিজেপির বিধায়ক আছে। তাই অঙ্কের দিক থেকেও অনেকটা পিছিয়েই শুরু করতে হচ্ছে দিলীপকে।
তবে দিলীপ ঘোষ নির্বাচনে দাঁড়ালেই সব অঙ্ক যে ঘেঁটে যায় তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ২০১৬ বিধানসভায় খড়গপুর সদর ও ২০১৯ লোকসভায় মেদিনীপুর। দুটো নির্বাচনেই বিজেপি অনেকটা পিছনে ছিল। কিন্তু ভোটের মাটিকে দারুণভাবে চেনা দিলীপ ময়দানে নামতেই খেলা পুরো ঘুরে গিয়েছিল। এবারও তেমন কিছু হবে কী?
নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোদী ঝড় শুরু হলে আর দিলীপ নামটার জন্য বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনের খেলা জমে গিয়েছে। তবে দিলীপকে অনেকটা পরিশ্রম করতে হবে। তৃণমূলের সংগঠনে এখানের চারটি বিধানসভায় একেবারে অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে। দিলীপকে দুই দুর্গাপুর ও বর্ধমান দক্ষিণ থেকে বড় লিড নিতেই হবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে তৃণমূলের কীর্তি আজাদ যাতে কিছুতেই মন্তেশর, ভাতার, গলসি- এই তিনটি কেন্দ্র থেকে কিছুতেই বড় লিড নিতে না পারেন। এ ক্ষেত্রে দিলীপ ঘোষকে বুথভিত্তিক সংগঠন কীভাবে সাজান সেটা শেষ কথা বলবে। বর্ধমান উত্তরে প্রচারে ঝড় তুলতে হবে দিলীপকে। অন্যদিকে, কীর্তি আজাদের চিন্তা শুধু দুটো-১) দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব, ২) আর দিলীপ ঘোষ নামটা। দিলীপের চিন্তা মন্তেশর, ভাতার ও গলসি নিয়ে। এই তিন বিধানসভায় তৃণমূলকে রুখতে না পারলে কীর্তি আজাদের সংসদে যাওয়া রুখতে পারবেন না দিলীপ। তবে তাঁর অতীত অভিজ্ঞতা বলে, ভোটের ময়দানে নামলে বিরোধী শিবিরের অনেক বিক্ষুব্ধের গোপন সাহায্য মিলবে। যেমনটা তিনি পেয়েছিলেন ২০১৯ লোকসভা ভোটে।
এক নজরে বর্ধমান-দুর্গাপুরের ভোট অঙ্ক
বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভায় সাতটি বিধানসভা কাদের দখলে (২০২১ বিধানসভায়)
১) বর্ধমান উত্তর: তৃণমূল (নীতীশ মালিক জিতেছিলেন প্রায় ১৮ হাজার ভোটে)
২) বর্ধমান দক্ষিণ: তৃণমূল (খোকন দাস জিতেছিলেন প্রায় ৯ হাজার ভোটে)
৩) দুর্গাপুর পূর্ব: তৃণমূল (প্রদীপ মজুমদার জিতেছিলেন প্রায় ৪ হাজার ভোটে)
৪) দুর্গাপুর পশ্চিম: বিজেপি (লক্ষ্মণ ঘোরুই জিতেছিলেন প্রায় ১৫ হাজার ভোটে)
৫) মন্তেশ্বর: তৃণমূল (সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জিতেছিলেন প্রায় ৩২ হাজার ভোটে)
৬) ভাতার: তৃণমূল (মঙ্গবিন্দা অধিকারী জিতেছিলেন প্রায় ৩২ হাজার ভোটে)
৭) গলসি: তৃণমূল (নেপাল ঘোরুই জিতেছিলেন প্রায় ১৯ হাজার ভোটে)
২০২১ বিধানসভা নিরিখে তৃণমূল এই লোকসভায় দেড় লক্ষাধিক ভোটে এগিয়ে আছে।
২০১৯ লোকসভার ফল
সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া (বিজেপি): ৫ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৭৬টি ভোট
মমতাজ সঙ্ঘমিতা (তৃণমূল): ৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৩৭টি ভোট
আভাস রায় চৌধুরী (সিপিআইএম): ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৩২৯টি ভোটে
ফল- সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া জয়ী ২৪৩৯ ভোটের ব্যবধানে
২০১৪ লোকসভায় এখানে প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার ভোটে নিকটতম সিপিএম প্রার্থী সঈদল হকের বিরুদ্ধে জিতেছিলেন তৃণমূলের মমতা সঙ্ঘমিতা।
২০০৯ লোকসভায় এখানে জিতেছিলেন সিপিএমের সঈদুল হক।
(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)