হাঁচি কিংবা কাশি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির মতই বেরিয়ে আসে। কিন্তু জানেন কি হাঁচির সময়ে না হেঁচে তা চেপে দিলে শ্বাসনালী (Windpipe) পর্যন্ত ছিঁড়ে যেতে পারে। এমন ঘটনাই ঘটল এক ব্যক্তির সঙ্গে। হাঁচি চাপার (Holding Sneeze) জন্যে ওই ব্যক্তি নিজের নাক এবং মুখ বন্ধ করে নেন। যার পরিণতি হিসাবে ব্যক্তির শ্বাসনালীতে প্রবল চাপ পড়ে এবং তা ছিঁড়ে যায়। চিকিৎসকেরা এই ঘটনাকে বিশ্বে প্রথম হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, হাঁচি নিয়ন্ত্রণের কৌশলটি বিপরীত প্রভাব ফেলেছে ব্যক্তির ক্ষেত্রে। প্রচণ্ড চাপে ব্যক্তির শ্বাসনালী ছিঁড়ে গিয়ে ঘাড়ের দুই পাশ ফুলে ওঠে। প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি। একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর শেষমেশ জানা যায় ব্যক্তির শ্বাসনালীতে (Windpipe) ছিঁড়ে ছিদ্র তৈরি হওয়ার বিষয়টি। পরবর্তীকালে, একটি সিটি স্ক্যানে দেখা যায় যে, তাঁর ঘাড়ের তৃতীয় এবং চতুর্থ অস্থিসন্ধির মধ্যে ছিদ্র তৈরি হয়েছে। যার ফলে ব্যক্তির ফুসফুস এবং বুকের মাঝখানে বাতাস জড়ো হয়েছে। নাক এবং মুখ চেপে হাঁচি আটকানোর (Holding Sneeze) কারণেই এই ছিদ্র তৈরি হয়েছে বলে ব্যক্তির মেডিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকেরা।
যদিও তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে অক্সিজেন সহ ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলি স্থিতিশীল রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য তাকে দুদিন হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময়ে তাকে ব্যথানাশক এবং জ্বরের ওষুধ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। এবং দু সপ্তাহ কোন রকম শারীরিক পরিশ্রম সম্পন্ন কাজ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। পাঁচ সপ্তাহ পরে একটি সিটি স্কান হয় ব্যক্তির। রিপোর্টে দেখা যায়, তাঁর শ্বাসনালীর ছিদ্র সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে এই ঘটনা থেকে বাকিদের সতর্ক হওয়া উচিৎ। চিকিৎসকের পরামর্শ, হাঁচির সময়ে নাক, মুখ যেমন বন্ধ করে নেওয়া উচিৎ নয় তেমনই মুখ বন্ধ করে কেবল নাক দিয়েও হাঁচি দেওয়া অনুচিত। এতে শ্বাসনালীতে চাপ পড়ে তা ছিদ্র হতে পারে। চিকিৎসকরা আরও জানাচ্ছেন, এই ঘটনা অত্যন্ত বিরল কিন্তু অসম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে ক্ষত নিরাময়ের জন্যে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনও হতে পারে। তা ছিদ্রের অবস্থান এবং রোগীর গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলি স্থিতিশীল কিনা তার উপর নির্ভর করে।