১৩ আগস্ট বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় বিশ্ব অঙ্গদান দিবস। অঙ্গদান সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা হয় এই দিনে। অঙ্গদানের ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে ভারত। তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতে মোট অঙ্গ দাতা ছিল প্রায় ৪.৫০ লক্ষ জন। দেশের জনসংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা অনেক কম। দেশে অঙ্গদানের অভাবের কারণে অঙ্গ প্রতিস্থাপনও হয় না। অঙ্গ দান করতে পারে এমন মানুষ খুব কমই আছে ভারতে। প্রতিবছর দেশে ১ লক্ষের বেশি মানুষের কিডনি বিকল হয়ে পড়ে এবং কিডনি প্রতিস্থাপন করার সুযোগ পায় প্রায় ৬ হাজার জন, অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি কিডনি দাতা খুঁজে পান না মানুষ। একইভাবে প্রতি বছর মাত্র ১৫০০ জন লিভার দান করেন, তবে প্রতিবছর প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয় ২৫ হাজার লিভার।

WHO অনুসারে, ভারতের জনসংখ্যার মাত্র ০.১ শতাংশ মানুষের মৃত্যুর পরে অঙ্গ দান করা হয়। যেখানে পশ্চিমা দেশগুলিতে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ তাদের অঙ্গ দান করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক দশকের মধ্যে স্পেন প্রতি মিলিয়ন জনসংখ্যায় ১৫ থেকে অঙ্গদানের হার বাড়িয়ে করেছে ৪০ শতাংশ। সেখানে ভারতে ২ শতাংশেও পৌঁছায়নি। স্পেনে ১০ শতাংশ অঙ্গ দাতাদের বয়স ৮০ বছর বা তার বেশি। তবে ভারতে এই বয়সের মানুষরা তাদের অঙ্গ দান করে না। এমন পরিস্থিতিতে অঙ্গদান সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সচেতনতার অভাবের কারণে ভারতে অঙ্গদানের হার কম, এর ফলে অঙ্গদানের গুরুতর অভাবের সম্মুখীন হয় ভারত। সঠিক সময়ে অঙ্গ না পাওয়ায় কারণে জীবনযুদ্ধে হেরে যান অনেক রোগী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে প্রতিবছর লিভার ফেইলিওর ও ক্যান্সারে মৃত্যু হয় ২ লক্ষ রোগী। যদি সময়মতো লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা হয় তবেই ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব। প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ হার্ট ফেইলিউরে আক্রান্ত হয়, কিন্তু হার্ট প্রতিস্থাপন করা হয় মাত্র ১০-১৫ জনের। সচেতনতার অভাবের কারণে ভারতে অঙ্গদানের সংখ্যা কম। অঙ্গ দান নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা থাকার কারণে মৃত্যুর পরও অঙ্গ দান করা হয় না। একজন অঙ্গ দান করলে জীবন বাঁচানো যায় অনেক রোগীর। অঙ্গ দান শরীরের কোনও ক্ষতি করে না। জীবিত অবস্থায় কিডনি ও লিভার দান করা সম্ভব এবং একজন মৃত ব্যক্তির চোখ, লিভার, কিডনি, হার্ট, ত্বকের মতো অঙ্গ দান করা হয়।